খুলনা: খুলনার নতুন কেউই বিএনপির ঘোষিত নতুন নির্বাহী কমিটিতে স্থান পাননি। সদ্য ঘোষিত কমিটিতে পুরাতন পদে আগের নেতারাই বহাল রয়েছেন।
অনেকে অভিযোগ করেছেন, কমিটিতে আন্দোলন-সংগ্রামে ত্যাগী ও পরীক্ষিত যোগ্য নেতাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। লঙ্ঘন করা হয়েছে জ্যেষ্ঠতা। প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে পরিবারতন্ত্রকে। যে কারণে বিএনপি নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে বাদ পড়েছেন খুলনা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ভাষাসৈনিক সাবেক সংসদ সদস্য এম নুরুল ইসলাম। বিএনপির কেন্দ্র থেকে সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছে প্রবীণ এই রাজনীবিদ ‘দাদু ভাই’ নামেই পরিচিত।
সদ্য বিলুপ্ত কমিটিতে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ছিলেন।
দাদু ভাইকে বাদ দেওয়ায় কীভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করবেন সে ভাষাও হারিয়ে ফেলেছেন অনেকে। নানা কৌশল অবলম্বন করে তৃণমূলের নেতারা রোববার (০৭ আগস্ট) সকালে ক্ষোভ ঝেড়েছেন।
‘দাদু ভাই’ ভক্ত বিএনপির কর্মী পূর্ব রূপসার আব্দুল্লাহ বলেন,গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা দাদু ভাই। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়া প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিকে বাদ দেওয়াটা বিএনপির ঠিক হয়নি। যিনি বিএনপির খুলনায় বীজ বুনলো তাকে উপড়ে ফেলে দেওয়ায় তৃণমূলের বিএনপি নেতাকর্মীরা হতাশ হয়েছেন।
খুলনার বিএল কলেজের সাবেক ছাত্রদল নেতা মাসুম বিল্লাহ বলেন, ঘোষিত কমিটিতে খুলনার নতুন কেউ না থাকায় হতাশ হয়েছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
তার মতে, এখানে বিএনপির বিভিন্ন স্তরের বিপুলসংখ্যক ত্যাগী ও সক্রিয় নেতা রয়েছেন। তাদের বাদ দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়ে নিয়েছেন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, যুদ্ধাপরাধীর সন্তান, সাবেক, বর্তমান শীর্ষ নেতাদের স্ত্রী, সন্তান ও ভাইসহ আত্মীয়স্বজনরা।
শনিবার ঘোষিত কমিটিতে স্থান পেয়েছেন খুলনা জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক মাজিদুল ইসলাম উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক শরীফ শাহ কামাল তাজ ও তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল।
এছাড়া নির্বাহী সদস্য হিসেবে আছেন মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আলী আজগর লবী, মহিলা দলের সাবেক সভানেত্রী সৈয়দা নার্গিস আলী, ড. মামুন রহমান এফসিএ, মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাহারুজ্জামান মোর্ত্তুজা, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম মনা, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি।
যদিও এ নিয়ে খুলনার সিনিয়র কোন নেতা মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে মহানগর বিএনপির এক বিবৃতিতে নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলা হয়েছে, ঘোষিত কমিটিতে বিগত দিনের গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়েছে। বিশেষ করে নতুন এই কমিটিতে ছাত্র রাজনীতির মধ্য থেকে উঠে আসা তরুণ নেতৃত্বকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যারা অতীতে এ দেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ইতিহাসে অনন্য অবদান রেখেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০১৬
এমআরএম/টিআই