স্ট্যাটাস দেওয়ার দুই ঘণ্টা পর পরিণতি এমন হবে- এটি হয়তো কল্পনাও করতে পারেননি ফয়সাল ও তার সহযোগীরা।
দিনে-দুপুরে সাভারে জমি দখল করতে গিয়ে সংঘর্ষে নিহত হন ওই যুবলীগ নেতা।
রোববার (০৪ জুন) বিকেলের ঘটনা। সাভার পৌরসভার জামসিং টেউটি এলাকায় জমি দখলে নেতৃত্বে দিতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় টেটাঁবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ফয়সাল।
পুলিশ জানায়, ওই এলাকার ফেলু মিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই ডা. কাদেরের জমি নিয়ে বিরোধ চলছিলো।
দুপুরে যুবলীগ নেতা সিএম ফয়সালের নেতৃত্বে শতাধিক ক্যাডার যান জমিটি দখল করতে। সেখানে চলে মহড়া। এক পর্যায়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে সহযোগীরা গা’ঢাকা দিলেও মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফয়সালকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ বলেছে, ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থেকে জমি দখল ও চাঁদাবাজিসহ নানা ধরনের অপরাধে জড়িত ছিলেন ফয়সাল।
মিছিলের অগ্রভাগে যেমন ছিলেন ফয়সাল, আবার পত্রিকার নিয়মিত শিরোনামও ছিলেন তিনি। চাঁদাবাজি থেকে জমি দখলসহ নানা অপকর্মেও তার নাম ছিলো সামনের কাতারে।
সাভারে ল্যাবএইডের জমির সীমানা প্রাচীর উঠছে, সেখানেও ফয়সালের চাঁদাবাজি। গার্মেন্টেস্ কারখানা থেকে ঝুট বের হবে, সেখানেও সমানতালে তিনি। আবার জমি দখলে পেশিশক্তির মহড়া লাগবে, সেখানেও ফয়সাল। সব সময়ই প্রস্তুত ছিলো তার বাহিনী। এভাবেই বেপরোয়া অপকর্মের খাতায় নাম লিখিয়েছিলেন ফয়সাল।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে ফয়সাল লিখেছিলেন, ‘আমি ভালো কাজ করি’। অথচ এসব অপকর্ম করতে গিয়েই বেঘোরে প্রাণ হারালেন তিনি।
আওয়ামী লীগের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ফয়সালের উত্থান মূলত ক্যাডার হিসেবে। তবে রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও তাকে দেখা যেতো ক্ষমতাসীনদের আশেপাশে।
‘শেষ পর্যন্ত এ পরিণতিই যে তার জন্যে অপেক্ষা করছিলো, তা জীবন দিয়ে, চরম মূল্য দিয়ে প্রমাণ করে গেলেন ফয়সাল’- মরদেহের পাশে এভাবেই আক্ষেপ করছিলেন ফয়সালের ঘনিষ্ঠ এক সহযোগী।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান জানান, ফয়সাল সন্ত্রাসী কাজে জড়িত ছিলেন। তার পৃষ্ঠপোষকদের বারবার সর্তক করা হয়েছিলো। তবে ফয়সাল পথে আসেননি।
লাবিব নামে তিন বছর বয়সী এক সন্তানের জনক ছিলেন ফয়সাল।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০১৭
জেডআর/এএসআর
** সাভারে প্রতিপক্ষের টেঁটাবিদ্ধ হয়ে যুবলীগ নেতা নিহত