বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবারের (২২ ফেব্রুয়ারি) কার্যতালিকায় আবেদনটি (ক্রিমিনাল আপিল নং ১৬৭৬/২০১৮-বেগম খালেদা জিয়া ওরফে খালেদা জিয়া বনাম রাষ্ট্র ও অন্যান্য) ছয় নম্বর ক্রমিকে রয়েছে। বৃহস্পতিবার কার্যতালিকায় থাকবে খালেদার আপিল
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে থাকবেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
মঙ্গলবার ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আপিল (আপিল নং ১৬৭৬/২০১৮) দায়ের করেন। আপিলের ফাইলিং আইনজীবী হয়েছেন আবদুর রেজাক খান। ৪৪টি যুক্তি তুলে ধরে এ আপিল করা হয়।
৮ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ঢাকার বকশীবাজার কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত আদালতের বিশেষ জজ ৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার ৫ বছর কারাদণ্ডের রায় দেন। একইসঙ্গে দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামির ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।
৪০৯ ও ১০৯ ধারা মোতাবেক আসামিপক্ষের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এ রায় দেন।
রায় ঘোষণার ১১দিন পর সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা রায়ের সার্টিফাইড কপি বা অনুলিপি হাতে পান।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে সরকারি এতিম তহবিলের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা আত্মসাতের ঘটনা ঘটিয়েছে।
পরিমাণের দিক থেকে তা বর্তমান বাজার মূল্যে অধিক না হলেও তর্কিত ঘটনার সময়ে ওই টাকার পরিমাণ অনেক বেশি ছিলো। আসামিদের মধ্যে খালেদা জিয়া ওই সময়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আসামি কাজী সলিমুল হক কামাল সংসদ সদস্য ছিলেন। আসামি কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী সরকারি কর্মচারী হয়েও আসামি খালেদা জিয়াকে সরকারি এতিম তহবিলের ব্যাংক হিসাব খুলতে সহায়তা করেন।
পরবর্তীতে ওই হিসাব থেকে দু’টি প্রাইভেট ট্রাস্টের অনুকূলে সরকারি অর্থের চেক বেআইনিভাবে প্রদান করায় খালেদা জিয়া ও কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী অপরাধ করতে সহায়তার সামিল।
আসামি তারেক রহমান, মমিনুর রহমান ও শরফুদ্দিন আহমেদ কৌশল অবলম্বন করে সরকারি তহবিলের টাকা একে অপরের সহযোগিতায় আত্মসাৎ করতে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেছেন। এর মাধ্যমে এই মামলার ছয়জন আসামির প্রত্যেকেই কোনো না কোনোভাবে লাভবান হয়েছেন। আসামিরা রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক অপরাধী হিসেবেও গণ্য হবেন। অর্থনৈতিক দুর্নীতি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বাভাবিক গতিকে ব্যাহত করে এবং উহার বাজে প্রভাব সমাজের প্রতিটি স্তরে সংক্রমিত হয়।
সাজা ঘোষণার পর থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৮
ইএস/জেডএস