তিনি বলেছেন, সেনাবাহিনী দেশের মানুষের যে কোনো দুর্যোগে সামনে দাঁড়িয়েছে। ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার মতো এতো বড় দুর্যোগ আর নেই।
শনিবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় আমীর খসরু বক্তৃতা করছিলেন। ‘নাগরিক অধিকার ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠন।
আমীর খসরু বলেন, আগামী নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের ব্যাপারটি সরকারের কাছে এতো স্পর্শকাতর হয়ে গেলো কেন- তা দেশের মানুষ বোঝে। সেনাবাহিনী মোতায়েন করে এতোগুলো নির্বাচন হলো, একটিও প্রশ্নবিদ্ধ হলো না এবং সেনাবাহিনী ছাড়া নির্বাচনগুলো প্রশ্নবিদ্ধই থেকেছে। তাহলে তাদের তদারকিতে নির্বাচনের বিষয়টি স্পর্শকাতর হলো কেন?
সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে উন্নয়নের মিথ্যাচার করছে অভিযোগ করে আমীর খসরু বলেন, তারা মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে উন্নয়নের কথা বলে যাচ্ছে। অধিকার কেড়ে নিয়ে যখন বারবার উন্নয়নের কথা বলতে থাকে, তখন আপনাকে বুঝতে হবে এটা একটা নিশ্চিত স্বৈরাচার সরকার। যুগে যুগে এটা হয়ে আসছে। উন্নয়নের কথা বিক্রি করে ক্ষমতা ধরে রাখা চলে আসছে।
সরকারি বিনিয়োগে মেগা-দুর্নীতি হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, এ দুর্নীতির টাকাটা বিদেশে চলে যাচ্ছে। সুইস ব্যাংকে যাচ্ছে, লন্ডনে, মালয়েশিয়া, কানাডা যাচ্ছে। সেখানে বাড়ি করছে তারা। এগুলো সব আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব এখন ওপেন। কার বাড়ি কোথায় সব জানা যায়। এগুলো লুকানো সম্ভব নয়। পানামা পেপার্সে তাদের নাম এসেছে। ব্যাংকগুলোর পরিস্থিতি খারাপ করে রেখেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়েছে দুই বছর আগে, এখনো তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করছে না। কারণ এ টাকা চুরি করার পেছনে তাদের লোকজন জড়িত।
দেশের মানুষের চাকরি নেই এবং ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে দাবি করে আমীর খসরু বলেন, জিনিসপত্রের দাম বেড়েই যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে যদি ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কথা বলেন, এর চেয়ে মিথ্যা আর কিছু হতে পারে না। বিশ্ব ব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বলছে, এ খবর সত্যি নয়। কারণ অর্থনীতির মাঠ পর্যায়ের যে খবর, তার সঙ্গে এ প্রবৃদ্ধির মিল নেই। এটি বানোয়াট। যখন সরকার পরিবর্তন হবে তখন এটার তদন্ত হওয়া উচিত, জনগণকে বিভ্রান্ত করে মিথ্যা প্রবৃদ্ধি দেখানো হয়েছে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক এস এম হাসান তালুকদার, জিয়া নাগরিক ফোরামের (জিনাফ) সভাপতি মিয়া মো. আনোয়ার প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৮
এমএইচ/আরআইএস/এইচএ/