ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

গ্রেফতারের অনুমতি পেলে এমপি রানার রিমান্ড চাইবে পুলিশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২২ ঘণ্টা, মে ৮, ২০১৮
গ্রেফতারের অনুমতি পেলে এমপি রানার রিমান্ড চাইবে পুলিশ

টাঙ্গাইল: আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাকে যুবলীগের দুই নেতা হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদনের শুনানি বুধবার (৯ মে) টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে অনুষ্ঠিত হবে।

আদালত গ্রেফতার দেখানোর অনুমতি দিলেই রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাইবে গোয়েন্দা পুলিশ।

টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি।

২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণের পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।

টাঙ্গাইল সদর আমলী আদালতে যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অশোক কুমার সিংহ গত ৩ মে (বৃহস্পতিবার) রানাকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন। আদালতের বিচারক জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আব্দুল্লাহ আল মাসুম আবেদন গ্রহণ করে বুধবার (৯ মে) শুনানির দিন ধার্য করেছেন।

অপরদিকে ঘাটাইল জিবিজি কলেজছাত্র সংসদের সহ সভাপতি (ভিপি) ছাত্রলীগ নেতা আবু সাঈদ রুবেলকে হত্যাচেষ্টার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) শামছুল ইসলাম ঘাটাইল আমলী আদালতে ওই দিনই (৩ মে) এ মামলায় রানাকে গ্রেফতার দেখানোর জন্য পৃথক আরেকটি আবেদন করেন।

আদালতের বিচারক জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম গোলাম কিবরিয়া আগামী বৃহস্পতিবার (১০ মে) আবেদনের শুনানির জন্য তারিখ দিয়েছেন। এ মামলায় আদালত গ্রেফতার দেখানোর অনুমতি দিলে রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করবে গোয়েন্দা পুলিশ।

আবেদনে অশোক কুমার সিংহ জানান, যুবলীগের দুই নেতা হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত তিন আসামির জবানবন্দিতে আমানুর রহমান খানের জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয়ে এসেছে। তাই এ ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে।

উল্লেখ্য, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা শামীম ও মামুন ২০১২ সালের ১৬ জুলাই তাদের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে টাঙ্গাইল শহরে এসে নিখোঁজ হন। ঘটনার পরদিন শামীমের মা আছিয়া খাতুন টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এক বছর পর ২০১৩ সালের ৯ জুলাই নিখোঁজ মামুনের বাবা টাঙ্গাইল আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্ত করে পুলিশ ওই বছর ২১ সেপ্টেম্বর মামলাটি তালিকাভূক্ত করে। এ মামলায় গ্রেফতার হওয়া শহরের বিশ্বাস বেতকা এলাকার খন্দকার জাহিদ গত বছর ১১ মার্চ, শাহাদত হোসেন ১৬ মার্চ এবং হিরন মিয়া ২৭ এপ্রিল আদালতে এ ঘটনার সঙ্গে রানার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে তারা উল্লেখ করেন, এমপি রানার দিক নির্দেশনায় যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুনকে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

অপরদিকে ঘাটাইলের ছাত্রলীগ নেতা আবু সাঈদ রুবেলকে হত্যাচেষ্টার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শামসুল ইসলাম জানান, আদালত গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করলে তদন্তের স্বার্থে আমানুর রহমান রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৯ নভেম্বর রাতে একদল সন্ত্রাসী আবু সাঈদকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এ হামলায় আবু সাঈদ পঙ্গু হয়ে যান। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া আসামি আব্দুল জব্বার বাবু ঘটনার সঙ্গে রানার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ২০১৬ সালের ২০ ডিসেম্বর আদালতে জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে আব্দুল জব্বার জানান, এমপি রানা কারাগারে থেকে আবু সাঈদকে কিছু করার নির্দেশ দেন। তার নির্দেশ মতোই হত্যার উদ্দেশে সাঈদের ওপর হামলা করা হয়।  

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলায় এমপি আমানুর রহমান খান রানা ও তার ভাইদের নাম বের হয়ে আসে। ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় গোয়েন্দা পুলিশ।

ফারুক হত্যা মামলায় রানার অপর তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পাসহ ১৪জন আসামি রয়েছে। এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে টাঙ্গাইল প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৮ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৮
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।