নির্বাচনের মাত্র ৫দিন বাকি (১৫ মে) থাকলেও প্রচারণার আছে তিন দিন। যে কারণে প্রচার-প্রচারণায় সরগরম খুলনা মহানগরী।
মহানগরীর মোড়গুলো এখন পোস্টারে ছেয়ে গেছে। দেখে মনে হয় যেন পোস্টারের নগর। অলিগলিতে চলছে মাইকিং। গানে, কবিতায় ও ছড়ায় মাইকে নানা রং-ঢংয়ে চলছে প্রচারণা। সিটির এ প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত সবখানেই এখন প্রচারণা। কেউ বলছেন নৌকা, আবার কেউ বলছেন ধানের শীষ। মেয়র পদে ৫জন প্রার্থী হলেও মূল আলোচনায় আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক ও বিএনপির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
আওয়ামী লীগের প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা মিডিয়া উপ-কমিটির অফিস সেক্রেটারি ও খুলনা জেলা যুবলীগের দফতর সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিয়াজ জানান, বৃহস্পতিবার মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক মহানগরীর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। এরপর তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক, শিশু হাসপাতাল, জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, আইনজীবী সমিতি, রেজিস্ট্রি অফিস, টিঅ্যান্ডটি অফিস সংলগ্ন এলাকাসমূহে গণসংযোগ করেন। এসময় তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে এবং জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
গণসংযোগ কালে তিনি বলেন, মাদকের দাপট, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমি জিহাদ ঘোষণা করেছি। আমি নির্বাচিত হলে সিটি করপোরেশন হবে সত্যিকারের দুর্নীতিমুক্ত একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। নগরবাসী কাঙ্খিত উন্নয়নে দলমত নির্বিশেষে সমাজের অভিজ্ঞ ও বিশিষ্টজনদের পরামর্শ গ্রহণ করা হবে। কাজের গুনগত মান বজায় রাখতে আমি নিজেই বরাবরের মতো সরেজমিনে উপস্থিত থাকবো। এরপর তিনি বড় বাজার এলাকায় গণসংযোগ ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা মিডিয়া উপ কমিটির সদস্য সচিব ও মহানগর বিএনপির তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এহতেশামুল হক শাওন জানান, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত ও ২০দলীয় জোট সমর্থিত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু বৃহস্পতিবার নগরীর ৩০ নং ওয়ার্ড থেকে এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেন। সকাল ৮টায় খানজাহান আলী রোডের কলেজিয়েট স্কুল থেকে তার কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর দারোগা পাড়া, গ্যাদন পাড়া হয়ে জোড়াকল বাজারে ব্যবসায়ী, দোকানদার, ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও ধানের শীষের লিফলেট বিতরণ করেন।
এরপর তিনি দলীয় কার্যালয়ে একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে অংশ নেন। ব্রিফিং শেষে পুনরায় গণসংযোগ শুরু করেন মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। বিএনপি অফিস, থানার মোড়, কেসিসি, খুলনা জেনারেল হাসপাতাল হয়ে কালীবাড়ি ঘাট পর্যন্ত চলে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ। অফিস-আদালত, দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানবাহনের চালক-যাত্রীও পথচারীদের হাতে লিফলেট তুলে দেন তিনি।
তিনি বলেন, খুলনা সিটি নির্বাচনের ধানের শীষের পক্ষে জনতার ব্যালট অভ্যূত্থান ঘটবে। শাসক দল এ তথ্য জানে। এটা তাদের জন্য আতঙ্কের কারণ। তারা চায় ধানের শীষের কর্মীদের গণগ্রেফতার করে, মামলা দিয়ে হয়রানি করে, বাড়ি বাড়ি তল্লাশির নামে আতঙ্ক ছড়িয়ে, আওয়ামী ক্যাডার দিয়ে মারপিট করে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে। কিন্ত এই শহর, এই নগরীর মানুষ আমার অতি আপনজন। আমি তাদের সুখ-দুঃখ, অভাব-অভিযোগ, চাহিদার কথা জানি। চলমান শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে পরিবর্তন আনতে হবে রাষ্ট্র ক্ষমতায়। কেসিসি নির্বাচনে সরকার পরিবর্তন হবে না। কিন্তু তাদের পতন আন্দোলন তরান্বিত হবে। জনতার রায়ে মেয়র নির্বাচিত হলে তিনি নগরবাসীর আধুনিক ও উন্নয়ত শিক্ষা নিশ্চিত করতে কলেজিয়েট স্কুলের মতো আরো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার আশ্বাস দেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৩ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৮
এমআরএম/এসএইচ