সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থিতা নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটেও শুরু হয়েছে নির্বাচনী আলোচনা। যদিও মেয়র পদটি নিয়ে আওয়ামী লীগ ছাড়া ক্ষমতাসীন জোটে শরিক দলের দৃশ্যমান কোনো প্রার্থী নেই।
২০দলীয় জোটে বিএনপি ছাড়াও জোটের শরিক জামায়াত মেয়র পদের শক্ত দাবিদার। যুদ্ধাপরাধের তকমা লাগানো এ দলটির শীর্ষস্থানীয় এক নেতা তফশিল ঘোষণার আগেই প্রচারণায় নেমেছেন। বিষয়টি ভালো চোখে দেখছে না বিএনপিসহ এ জোটের শরিকদলগুলোর নেতাকর্মীরা।
যদিও নির্বাচনী তৎপরতায় যুক্ত রয়েছেন বিএনপির হাঁফ ডজন নেতা। আওয়ামী লীগ ও জাতীয়পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন আরও ছয়জন। এদের মধ্যে থেকে শেষ পর্যন্ত অন্তত তিনজন দলীয় প্রতীক নিয়ে ঠিকে থাকতে পারেন নির্বাচনী মাঠে-এমনটি মনে করছেন রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত নির্বাচনের মতো সিলেট বিএনপিতে এবারের নির্বাচনেও একাধিক প্রার্থী থাকবেন।
তাদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান মেয়র ও দলের কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয়সহ স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান, মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, সিনিয়র সহ সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর আবদুল কাইয়ুম জালালী পংকী, সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম ও মহানগর বিএনপির সহ সভাপতি ও প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদী।
এদের মধ্যে বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ফের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছেন।
আরিফুল হক চৌধুরী জানানা, দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্দেশে তিনি নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে তাকেই দলীয় প্রতীক দেওয়া হবে এমন আশাবাদী আরিফুল হক চৌধুরী। যদিও খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া বিএনপি সিসিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকা বিএনপির মতো দীর্ঘ না হলেও আলোচনায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের তিনজন।
তারা হলেন সিসিকের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ এবং মহানগর কমিটির শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ। দলের কোনো পর্যায়ে সম্পৃক্ত না থাকলেও শুধু অর্থমন্ত্রীর কাঁধে ভর করে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে চান জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন সেলিম।
সিসিসি নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত প্রার্থী দিতে পারে মহাজোটের অন্যতম শরিকদল জাতীয়পাটি। এক্ষেত্রে আলোচনায় রয়েছেন দু’জনের নাম। তাদের একজন জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা সিলেট পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান বাবরুল হোসেন বাবুল। অপরজন মহানগর জাপার সাবেক সভাপতি সাবেক সিটি কাউন্সিলর আবদুস সামাদ নজরুল। এদের মধ্যে মেয়র পদে নির্বাচন করতে দীর্ঘদিন ধরে মাঠে রয়েছের নজরুল।
তবে আলোচনায় থাকলেও এখনো নির্বাচনী তৎপরতায় দেখা যায়নি বাবরুল হোসেন বাবুলকে। দীর্ঘদিন ধরেই তার দেখা নেই দলীয় কোনো কর্মসূচিতে। তিনি রাজনীতির বাইরে। আর খেলাফত মজলিসের একক মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রচারণায় রয়েছেন দলটির নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন।
দলীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এবার সিসিকের মেয়র পদটি দখল নিতে চায় বিএনপি জোটের শরিকদল জামায়াত। এ লক্ষ্যে দলীয় শীর্ষ নেতারা বিএনপিকে নানাভাবে চাপে রেখেছেন। সিসিক ছাড় নিশ্চিত করতে রাজশাহীতে এরই মধ্যে প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াত। তবে আসলে সেখানে নির্বাচনের ইচ্ছা নেই তাদের।
জামায়াতের নেতারা বলছেন, ‘বিএনপি সিলেটে তাদেরকে ছাড় না দিলেই কেবল রাজশাহীতে ভোট করবেন তাদের প্রার্থী।
নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন হারানোয় স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের অবশ্য দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের সুযোগ নেই। তাদেরকে জোটের কারও প্রতীক অথবা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করতে হবে। আর সে প্রস্তুতিই নিচ্ছেন তারা।
দলীয় সূত্র জানায়, সিলেটে যেকোনো মূল্যে মেয়র পদে নির্বাচন করবে জামায়াত। সেক্ষেত্রে তাদের পছন্দের প্রার্থী জামায়াতের মহানগরের আমির এহসানুল মাহবুব জোবায়েরকে ঠিক করা হয়েছে। সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী হিসেবে জোরেসোরে প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছেন ওই প্রার্থী।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৩০ জুলাই সিলেট, বরিশাল ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট হবে। আর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ২৮ জুন।
বাংলরাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০১৮
এনইউ/এএটি