প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, আমাদের সরকারের যে উন্নয়ন সেটা জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে। সেইসঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, খুনী, দুর্নীতিবাজরা যাতে আর ক্ষমতায় না আসতে পারে সেটা আপনাদের দেখতে হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা শনিবার (৩০ জুন) দলের দ্বিতীয় পর্যায়ের বিশেষ বর্ধিত সভায় একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে দিনব্যাপী এ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বর্ধিত সভায় চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল বিভাগের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মহানগরের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে বলতে হবে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছিলেন বলেই আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। আগামী নির্বাচনেও মানুষের কল্যাণের মার্কা নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। মানুষ সুখে থাকলে দুঃখের কথা ভুলে যায়। তাই উন্নয়নের কথা তাদের কাছে গিয়ে বলতে হবে। দেশের উন্নয়নে ও জনগণের কল্যাণে আমরা যেসব কর্মসূচি নিয়েছি সেগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরবেন। আগামী নির্বাচনে স্বাধীনতা বিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, খুনী, দুর্নীতিবাজ, মানি লন্ডারিং, বঙ্গবন্ধুর খুনি এবং খুনিদের বিচারে বাধা ও আশ্রয়-প্রশ্রয়দানকারী, মাদক ব্যবসায়ীরা যাতে আর ক্ষমতায় না আসতে পারে সেটা আপনাদের দেখতে হবে।
শেখ হাসিনা দলের তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশে আরও বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনো রকম দলীয় কোন্দল যেন না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। যেখানে কোন্দল আছে তা দ্রুত মিটিয়ে ফেলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের সংগঠনকে আরও সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে হবে। গ্রুপিং করতে গিয়ে, নিজের দল ভারী করতে গিয়ে স্বাধীনতাবিরোধী ও অন্য মতাদর্শের লোকজনকে দলে না ভিড়িয়ে নতুন কর্মী সৃষ্টি করতে হবে। জনসমর্থন বাড়াতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে সবাইকে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সবার সহযোগিতায় আমরা জঙ্গি দমনে সফল হয়েছি। মাদকবিরোধী অভিযান চলছে। মাদক শুধু একটি জীবন নয়, পুরো পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়। মাদকের বিরুদ্ধে যে অভিযান চলছে তাতে সবার সহযোগিতা চাই। গ্রামে-গঞ্জে সবার কাছে মাদকের কুফল তুলে ধরতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সবাই অভিযান চালাবেন।
প্রধানমন্ত্রী তৃণমূল পর্যায়ে সরকারের উন্নয়ন ও গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির কথা তুলে ধরে বলেন, আমরা একটি মানুষকেও গৃহহীন রাখবো না। যাদের জমি আছে কিন্তু ঘর করার সামর্থ্য নেই তাদেরও আমরা ঘর করার টাকা দিচ্ছি। আমি নির্বাচিত চেয়ারম্যানদের অনুরোধ করবো সরকার যে উদ্যোগ হাতে নিয়েছে ও যে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে, তা যেন তাদের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছায় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। গ্রামের রাস্তাগুলো যেন ভালোভাবে তৈরি হয়, কোনো দুর্নীতি যেন না হয় লক্ষ্য রাখবেন।
দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমি নিজের জন্য কখনও ভাবি না। আমি যেটুকু কাজ করি, করেছি দেশের জনগণের জন্য। জনগণের উন্নয়ন করাই আমার লক্ষ্য।
এ সময় আবেগাপ্লুত কণ্ঠে শেখ হাসিনা বলেন, আমি ১৯৮১ সালে সব হারিয়ে রিক্ত হয়ে দেশে আসি। আমার পরিবারে কেউ ছিলো না। আমার পরিবার ছিলো আওয়ামী লীগ। আর পেয়েছি এদেশের মানুষের ভালোবাসা। যেখানেই গেছি পেয়েছি ভালবাসা। তখনই উপলব্ধি হয়েছে আমার পিতা কেন এদেশের মানুষের জন্য আত্মত্যাগ করেছিলেন, জীবন দিয়েছিলেন। আপনারাই আমার পরিবার। এই দেশকে আমরা উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো, আমরা এই প্রতিজ্ঞা করি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৩ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৮
এসকে/আরআর