বৃহস্পতিবার (৫ জুলাই) দুপুরে নাগরিক ঐক্য’র আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বাংলানিউজকে একথা বলেন।
মান্না বলেন, নাগরিক ঐক্যকে কেন নিবন্ধন দেওয়া হয়নি, সেটা জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের চিঠি আমার হাতে এসেছে।
তিনি বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নাগরিক ঐক্য সব প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছিল। এরপর গত ৮ এপ্রিল একটা চিঠির মাধ্যমে আমাদের আবেদনে কিছু ঘাটতির কথা জানানো হয়। আমরা যেভাবে আমাদের ডকুমেন্ট জমা দিয়েছিলাম, তাতে সেই বর্ণিত ঘাটতিগুলো থাকার কথা না। কিন্তু তবুও আমরা আন্তরিকতার প্রমাণ রাখতে আরও কিছু ডকুমেন্ট যুক্ত করেছিলাম। নিবন্ধন পাওয়ার ঐকান্তিক ইচ্ছায় আমরা এরপরও নির্বাচন কমিশনের কাছে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে জানতে চেয়েছিলাম আমাদের আর কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন থাকলে আমরা সেটাও করতে প্রস্তুত আছি। এ ব্যাপারে আমাদের বিস্তারিত পথনির্দেশ করা দূরে থাকুক তারা আমাদের ন্যূনতম সাড়াও দেননি।
মান্না আরও বলেন, চূড়ান্ত চিঠি দেওয়ার আগে মিডিয়ায় খবর এসেছিল, নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন সংক্রান্ত কমিটি মাত্র দুইটি দলকে নিবন্ধনের পরবর্তী পর্যায়ের যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সুপারিশ করেছে। এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের বক্তব্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। তিনি বলেছেন, ‘নিবন্ধনযোগ্য দল পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে’। বাংলাদেশ কংগ্রেস আর গণ আজাদী লীগ ছাড়া আর কোনো দল নির্বাচন কমিশনের বিবেচনায় নিবন্ধনের যোগ্য নয়, এটা কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। অবশ্য বর্তমান নির্বাচন কমিশনের বিবেচনাশক্তি সম্পর্কে এই দেশবাসীর ভালো ধারণা আছে।
তিনি বলেন, যে দুইটি দলকে পরবর্তী যাচাই-বাছাই এর জন্য সুপারিশ করা হচ্ছে সে দুইটি দলের অস্তিত্ব সম্পর্কে দেশবাসীকে জিজ্ঞেস করলেই জবাব পাওয়া যাবে। কোনো দল ছোট কিংবা বড় সেটা নিয়ে হেয় করার মানসিকতা আমাদের নেই। কিন্তু নির্বাচন কমিশনই দলকে হেয় করার কাজ শুরু করেছে বলেই কথাটা বলতে বাধ্য হয়েছি।
সম্প্রতি খুলনা এবং গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা এবং নির্বাচন সংক্রান্ত নানা পদক্ষেপে স্পষ্টভাবেই বোঝা যায় বর্তমান নির্বাচন কমিশন সরকারের তল্পিবাহক। যে দুইটি রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে, সেই দুইটি দলের কী সাংগঠনিক যোগ্যতা আছে আমরা জানি না। কিন্তু এটা জানি, এদের একটি ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বের ১৪ দলীয় জোটে আছে। নানা সূত্রে জানা গেছে, অপর দলটিও দ্রুত সেই জোটে ভিড়বে। বোঝাই যায় নির্বাচন কমিশন কার ইঙ্গিতে নিবন্ধন দেওয়া বা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তাই যখন আমাদের নিবন্ধন দেওয়া হবে না মর্মে নির্বাচন কমিশনের চিঠি পাই, তখন আমরা বুঝি, এ সবই পূর্ব নির্ধারিত সিদ্ধান্ত। আমরা আশা করেছিলাম অন্তত নিবন্ধনের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ আচরণ করবে, কিন্তু এখানেও তারা দলদাসের মতো আচরণের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১৮
এমএইচ/আরআর