সোমবার (০৯ জুলাই) কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মহানগর নাট্যমঞ্চে প্রতীকী অনশনে সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে প্রতীকী অনশন চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনশন কর্মসূচিতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, যুগ্ম-মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদক, যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিকদল, কৃষকদল, মহিলা দল, ওলামাদল, তাতী দল, মৎস্যজীবী দল, জাসাসসহ মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপির বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার অন্যায়ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেছে। তাকে তার পছন্দ মতো হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। কারাগারে তাকে ন্যূনতম প্রাপ্যটুকুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র করছে।
সারাদেশে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে এমন অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকারকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, নির্বাচন কমিশন ভেঙে দিয়ে নতুন করে কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে। সংসদ ভেঙে দিতে হবে, সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। তাহলেই নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এরপরই এ দেশে নির্বাচন হবে অন্যথায় কোনো নির্বাচন হবে না।
দলমত নির্বিশেষে সকল রাজনৈতিক দল, সংগঠন, পেশাজীবী সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শুধুমাত্র খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য নয়, দেশের ১৬কোটি মানুষের মুক্তির জন্য, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
গ্রেফতার হওয়া ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকারকে জনসমক্ষে হাজির করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ দেশের সংবিধান অনুযায়ী, আইন অনুযায়ী কাউকে গ্রেফতার করতে হলে আগে থেকেই তাকে জানাতে হবে এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে সোপর্দ করতে হবে। কিন্তু গতকাল (৮ জুলাই) রাতে ইসহাক সরকারকে গ্রেফতার করার পর এখনও তাকে আদালতে নেওয়া হয়নি। তার সম্পর্কে পরিবারকেও কিছু জানানো হয়নি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ইতোপূর্বে এমন আরও অনেক ঘটনা ঘটেছে। আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেফতারের পর তাদের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ কারণে ইসহাক সরকারকে নিয়ে আমরা চিন্তিত। অবিলম্বে আমরা তার খবর জানতে চাই। তার পরিবারকে জানানো হোক- সে কোথায় আছে, কেমন আছে?
প্রতীকী অনশনে বিএনপি নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, নিতাই রায় চৌধুরী, সেলিমা রহমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, আতাউর রহমান ঢালী, কবির মুরাদ, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান সালেহ প্রিন্স, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, আমিরুল ইসলাম খান আলীম, বিএনপি নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, কর্নেল (অব.) শাহজাহান মিয়া, আবু নাসের মুহম্মদ রহমাতুল্লাহ, রফিক সিকদার, আমিনুল ইসলাম, শাহজাহান মিয়া সম্রাট, আবেদ রাজা, আব্দুল খালেক প্রমুখ।
২০ দলীয় জোটের শরীক নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, জাতীয় পার্টি (জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাগপার মহাসচিব খোন্দকার লুৎফর রহমান, পিপলস লীগের মহাসচিব সৈয়দ মাহবুব হোসেন প্রমুখ।
বক্তব্য দেন, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০১৮
এমএইচ/এমএ