ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

১৪ দলের পরিধি বাড়াতে আপত্তি শরিকদের

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৩ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৮
১৪ দলের পরিধি বাড়াতে আপত্তি শরিকদের

ঢাকা: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের পরিধি বাড়ানোর উদ্যোগে আপত্তি করছে জোট শরিকরা। ২৩ দফার ভিত্তিতে গড়া ১৪ দলের আদর্শিক পার্থক্যের কারণেই এই আপত্তি বলে জানা যায়।

প্রস্তাবিত দলগুলোকে জোটে আনলে আদর্শিক সংঘর্ষ তৈরি হবে বলে মনে করে ১৪ দলের শরিক দলগুলোর নেতারা।  

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জোট সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

তৃণমূল বিএনপি, ইসলামিক ফ্রন্ট, কৃষক শ্রমিক পার্টি, সম্মিলিত ইসলামিক জোট, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স, গণতান্ত্রিক আন্দোলন, জাগো দল, একামত আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক জোটকে ক্ষমতাসীন জোটে আনতে চায় আওয়ামী লীগ। তবে এর সঙ্গে একমত হতে পারছেন না জোটের বর্তমান শরিকরা।

১৪ দলের নেতারা জানান, এই দলগুলো বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। কোনো কোনোটি ছিল বিএনপি-জামায়াত জোটের সঙ্গে। আর ১৪ দল গড়ে উঠেছিল বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার পক্ষের অসম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক চেতনার জোট হিসেবে।  

যে ২৩ দফা আদর্শের ভিত্তিতে এই ১৪ দল গড়ে ওঠে, এই দলগুলোর সঙ্গে আদর্শের সঙ্গে তার বিরাট পার্থক্য রয়েছে। দলগুলোকে জোটে নেওয়া হলে আদর্শের দিক থেকে তা সাংঘর্ষিক হবে। তবে এই দলগুলো নিয়ে নির্বাচনী জোট করা যেতে পারে। নির্বাচনী জোট হিসেবে যে মহাজোট আছে তাতেও যুক্ত করা যেতে পারে।

১৪ দলের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে ১৪ দলে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। তবে আমি যতটুকু জানি ওই দলগুলোকে মহাজোটে নেওয়া হবে। আর ১৪ দলে আসতে হলে এই জোটে যে ২৩ দফা কর্মসূচি আছে সেই ২৩ দফাকে মেনে নিয়ে আসতে হবে।  

এদিকে গত ১৮ জুলাই আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম এই দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের জানান, দলগুলো ১৪ দলের সঙ্গে কাজ করতে চায়। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এর আগের দিন ১৭ জুলাই ১৪ দলের বৈঠকে প্রসঙ্গটি তোলা হয় এবং ওই দলগুলো ১৪ দলে আসতে চায় বলে মোহাম্মদ নাসিম জানান।  

তখন ১৪ দলের নেতারা জোটের পরিধি বাড়ানোর আপত্তি জানান। তারা যুক্তি দেখান যে আদর্শ ও লক্ষ্য নিয়ে ১৪ দল গঠন করা হয়েছিল ওই দলগুলোকে জোটে আনলে ১৪ দলের মূল স্প্রিট ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে এর বিকল্প হিসেবে তারা ওই দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনী জোট করার পক্ষে মতামত দেন। সেক্ষেত্রে ১৪ দল, জাতীয় পার্টির সমন্বয়ে যে মহাজোট আছে সেই মহাজোটে ওই দলগুলোকে সম্পৃক্ত করার কথা বলা হয়।

এ বিষয়ে জাসদের একাংশের সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ১৪ দল একটি আদর্শিক জোট। আমরা এই ধারাটা অব্যাহত রাখবো। সব ধরনের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তো আর জোট করা যায় না। আওয়ামী লীগ যদি মনে করে তাহলে একটি নির্বাচনী জোট করতে পারে বা এদের মহাজোটে নিতে পারে।

কমিউনিস্ট কেন্দ্রের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অসিত বরণ রায় বাংলানিউজকে বলেন, এই দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনী জোট হতে পারে। ১৪ দল একটি আর্শিক জোট। ইচ্ছা করলেই কেউ এই জোটে আসতে পারবে না। জোটে আসতে হলে যে ২৩ দফার ভিত্তিতে ১৪ দল গঠন হয়েছিল সেই ২৩ দফা মানতে হবে। অনেকেই তো এই ২৩ দফা মানে না। এই দলগুলোকে বৃহত্তর জোট মহাজোটে নেওয়া যেতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ০৬০০ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৮ 
এসকে/এসআই/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।