ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ছাত্রলীগের দু’পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ১৪৪ ধারা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৫ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৮
ছাত্রলীগের দু’পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ১৪৪ ধারা ছাত্রলীগের দু’পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। ছবি: বাংলানিউজ

মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের হরিরাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটিতে ছাত্রদলের এক নেতাকে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটির সভাপতি করায় কয়েকদিন ধরেই চলছে উত্তেজনা।

সোমবার (৩০ জুলাই) দুপুরে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, মিছিল-সমাবেশ ও পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটেছে। ফলে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্ক্ষায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মধ্যে একপক্ষ হচ্ছে নবগঠিত কমিটির সভাপতি লুৎফর রহমানের নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। অপর পক্ষ পদ বঞ্চিত নেতাকর্মীরা। দুপুর ১২টার দিকে পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতা রবিউল ইসলাম রাজার নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপজেলা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন।

মিছিলটি উপজেলা চত্ত্বর পরিদর্শন শেষে হরিরাপুর-মানিকগঞ্জ সড়কের ওঠার চেষ্টা করলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে পুলিশ রাস্তা থেকে তাদের সরিয়ে দিলে নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। পরে তারা উপজেলা চত্ত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ করতে থাকেন।

বক্তরা অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রদলের কর্মী দ্বারা হরিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি করা হয়েছে।

হরিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক কার্যকরী সদস্য রবিউল ইসলাম রাজা বলেন, ছাত্রদলের নেতা লুৎফর রহমানকে হরিরাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটির সভাপতি করায় ছাত্রলীগকে কলঙ্কিত করা হয়েছে। ছাত্রদল কর্মী দ্বারা ছাত্রলীগের কমিটির বাতিল না করা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

এদিকে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা চত্ত্বরে ঢুকতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয় উত্তেজনা, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এ সময় এলাকার দোকানপাট কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পুলিশের লাঠিচার্জে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় দু’পক্ষ। পরিবেশ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও থেমে থেমে উত্তেজনা আর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা দেওয়ান সায়েদুর রহমানের মধ্যস্থতায় পরিবেশ কিছুটা শান্ত হয়। তবে এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করায় যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্ক্ষা করছে স্থানীয়রা। দুপুরের পর পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্ক্ষায় হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করেন। তবে ছাত্রলীগের এই হট্টগোলের নেপথ্যে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কয়েক নেতার ইন্দন রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

হরিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি লুৎফর রহমান বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করি। আমরা নেতাকর্মীদের নিয়ে আনন্দ মিছিল করতে গেলে অপর পক্ষের নেতাকর্মীরা হট্টগোলের সৃষ্টি করে।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী রাজু আহমেদ বুলবুল বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগের কথা শুনছি, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও ভ্রান্ত কথা। যারা এ দলের ভালো চায় না তারাই এ কথা ছড়াচ্ছে।

হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুক আহমেদ বলেন, ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মধ্যে কয়েকদিন ধরেই উত্তেজনা চলছিল। উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে দু’পক্ষই মিছিল সমাবেশ করে। একপর্যায়ে এক পক্ষ চড়াও হয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ এবং লাঠিসোটা নিয়ে অপর পক্ষের দিকে ধাওয়া করলে আমরা তা প্রতিহত করি। তবে পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্ক্ষায় সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

হরিরাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইলয়াছ মেহেদি বলেন, ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও বিশৃঙ্ক্ষলার ফলে দুপুরের পর থেকে উপজেলা শহর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ ধারা বলবদ থাকবে।

২৬ জুলাই হরিরামপুর উপজেলা ২৫ সদস্যর ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করার পর থেকেই উত্তেজনা চলছে। এরইমধ্যে নবগঠিত কমিটির কয়েক নেতা পদ থেকে সরে এসেছেন বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১০১ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৮
কেএসএইচ/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।