রোববার (২৬ আগস্ট) ফেসবুকে এসব কথা লিখে পোস্ট করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী।
রব্বানী ফেসবুকে আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ; আদর্শিক পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবন ও যৌবনের শ্রম-ঘামে প্রতিষ্ঠিত আমাদের প্রাণের প্রতিষ্ঠান, আমাদের আবেগ ভালোবাসা, নির্ভরতার ঠিকানা।
‘ছাত্রলীগের বিগত দিনের কমিটি নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে চাইনা। তবে পিতা মুজিবের একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে আমার মনে হয় ছাত্রলীগের যে কোন পর্যায়ে অনুপ্রবেশের সুযোগ যারা সৃষ্টি করেছে, যারা ভাই ভিত্তিক রাজনীতি আর স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন করেছেন তারা হয়তো এমনটা তাদের অবচেতন মনে করেছেন’।
‘ছাত্রলীগ নিয়ে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত যে হতাশা, যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে সেই হতাশা দূর করে আশার আলো ফোটাতে এবং সেই আলোর বিচ্ছুরণ তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে এবারের ছাত্রলীগের কমিটি করেছেন স্বয়ং বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা। কথা দিচ্ছি, জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও আপার সে আস্থা-বিশ্বাসের মর্যাদা রাখবো। ছাত্রলীগের প্রতিটি পর্যায়ে এমন জনবান্ধব ও শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মসূচী থাকবে, নেতৃত্ব মূল্যায়ন পদ্ধতি এমন হবে, যেন গণ মানুষ ভাবে, সে যেনো তাদেরই পছন্দে নির্বাচিত। মুখ থেকে যেন অজান্তেই বের হয়ে আসে, এই তো বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার কারিগর; শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ’।
‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাস আর শেখ হাসিনার জনবান্ধব উন্নয়ন-রাজনীতির দর্শনে প্রবল আস্থা রেখে সেবার ব্রতে শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড হয়ে নিরলস শ্রম দিতে হবে। আপনাকে অবশ্যই মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন হতে হবে। মার্জিত আচরণ, সুন্দর ব্যবহার আর মানবিক কাজে সবার আগে সবসময় ছাত্রলীগকে দেখতে চান আমাদের মমতাময়ী নেত্রী, মানবতার মা, শেখ হাসিনা। স্বেচ্ছায় রক্তদান, পীড়িতের সেবা, আর্তমানবতার পাশে দাঁড়ানো সহ যেকোন জনহিতকর কাজে ছাত্রলীগ থাকবে সবার আগে’।
‘সিটিজেন জার্নালিজম আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই স্বর্ণযুগে সময়ের সাথে এগিয়ে যেতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যথাযথ জ্ঞান থাকতে হবে। অনলাইনে অপশক্তির নেতিবাচক কর্মকান্ড ও গুজব-সন্ত্রাসের দাঁতভাঙা জবাব দিতে অনলাইনে একটিভ থেকে পূর্ণ সক্ষমতা অর্জন করতে হবে শেখ হাসিনার ছাত্রলীগকে। সংগঠনের প্রতি আবেগ এবং অর্পিত দায়িত্ব-কর্তব্যের প্রতি নিষ্ঠাবান থাকা আবশ্যক।
ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ; এই শ্লোগান জপে দেশ ও দশের সেবায় নিজেকে সমর্পণ করার মানসিকতা থাকতে হবে। আপনার এবং আপনার পারিবারিক রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ডে আদর্শিক ত্রুটি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যে কোন পর্যায়ে মূল্যায়নে বড় অযোগ্যতা হিসেবেই বিবেচিত হবে’।
‘পদ-পজিশন, ক্ষমতা যদি আপনি আপনার ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের মানসিকতা রাখেন, তাহলে শিক্ষা-শান্তি-প্রগতির এই পবিত্র পতাকা আপনার হাতে নিতান্তই বেমানান। হাসিমুখে ভালোবাসা দিয়ে ইতিবাচক কাজের মাধ্যমে মানুষের মন জয় করে তাদের অন্তরে শ্রদ্ধা-ভালোবাসার স্থান করে নিতে হবে’।
‘যেদিন থেকে ছাত্রলীগের নেতা বা কর্মী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেবেন, সেদিন থেকে আপনি পৃথিবীর বৃহত্তম একান্নবর্তী পরিবারের অবিচ্ছেদী অংশ। আপনার কথা-বার্তা, আচার-ব্যবহার, সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে সংগঠনের ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তুলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে নৌকার পক্ষে জনমত গঠন তুলতে ছাত্রলীগকে মূখ্য ভূমিকা রাখতে হবে’।
‘তথাকথিত পরাধীনতা ও গতানুগতিক বাধ্যবাদকতার শেকল ভেঙে আপনার মেধা-মনন-সৃষ্টিশীলতা বিকাশের সেরা প্লাটফর্ম হবে ছাত্রলীগ। সেই প্লাটফর্ম থেকে আপনার মেধার আলোয় উদ্ভাসিত হবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা। আপনার মেধা বিকাশে যেকোন প্রতিবন্ধকতা দূর করতে ছাত্রলীগ বদ্ধপরিকর’।
‘আর একটা কথা, পথ পেয়ে নেতা বনে যাবের সুযোগ এই ছাত্রলীগে নেই, আপনাকে মানবিক ও সাংগঠনিক গুণের সমন্বয়ে আপনার ইউনিটে তৃণকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মন জয় করে তাদের মনে নেতা হিসেবে আসন গাড়তে পারলেই আপনি শীর্ষ পদের জন্য বিবেচ্য হবেন। আদর্শিক পিতা বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন নিয়ে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরি, দেশরত্ন শেখ হাসিনা সেই স্বপ্নকে পূর্ণতা দিতে ছাত্রলীগের উপরই আস্থা রেখেছেন। আমার-আপনার, আমাদের ছাত্রলীগের লাখো আদর্শিক কর্মীর নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশরত্ন শেখ হাসিনার চলার পথকে মসৃণ রাখতে, উন্নয়নের মার্কা নৌকার নিরলস কাজ করতে যদি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন, তাহলে শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ আপনাকে স্বাগতম জানাতে, আপনার যোগ্যতা, শ্রম আর ত্যাগের যথাযথ মূল্যায়ন করতে অধীর চিত্তে অপেক্ষা করছে’।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০১৮
এমআইএস/এনএইচটি