বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। আর নির্বাচন সামনে রেখে ইতোমধ্যে যুক্তফ্রন্ট ও ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা মাঠে নেমেছেন।
বিএনপির শীর্ষ নেতারা ছাড়াও যুক্তফ্রন্ট ও ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা ঢাকায় অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে যাচ্ছেন। কূটনীতিকদের বাসভবন ছাড়াও দূতাবাস বা কোনো সুবিধাজনক স্থানে বৈঠক করছেন নেতারা। আগামী জাতীয় নির্বাচনে সহায়তা চাইছেন তারা। কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে আলোচনা সমালোচনা হলেও থেমে নেই তাদের এ কূটনৈতিক তৎপরতা।
মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খানের বাসায় নৈশভোজের আয়োজনে বেশ কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা অংশ নেন। এদের মধ্যে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, নরওয়ে, স্পেন প্রভৃতি দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যা থেকে রাত সোয়া ১১টা পর্যন্ত কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন বিএনপি নেতারা। একইসঙ্গে বিএনপি ছাড়াও সেখানে যুক্তফ্রন্ট ও ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। নৈশভোজ থেকে বেরিয়ে কোনো কূটনীতিক বা রাজনৈতিক নেতা গণমাধ্যমের সঙ্গে মুখ খোলেন নি।
এর আগে চলতি মাসের ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে গিয়ে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে দুই ঘণ্টারও বেশি বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব। এছাড়া চলতি মাসের ৪ সেপ্টেম্বর বিএনপির পক্ষ থেকে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়। সেই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, চীন, রাশিয়ার, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সুইজারল্যান্ড, পাকিস্তান, কানাডা, স্পেন, প্যালেস্টাইন, জাপান, নরওয়ে ও মিয়ানমারের কূটনীতিকরা অংশ নেন। বৈঠকের প্রায় এক মাস আগে ৭ আগস্টও কূটনীতিকদের সঙ্গে বিএনপির নেতারা বৈঠক করেছিলেন।
সূত্র জানায়, বিএনপি, ঐক্যপ্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্টের নেতারা আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিদেশি কূটনীতিকদের সহযোগিতা চেয়েছেন। এ নির্বাচন প্রক্রিয়ার দিকে দৃষ্টি রাখার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে। তবে বিদেশি কূটনীতিকরা নির্বাচনী পরিস্থিতি বোঝার জন্যই এসব বৈঠকে অংশ নিয়ে থাকেন।
জাতীয় নির্বাচন সামনে শুধু দেশের মধ্যেই কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই বিরোধী পক্ষ। বিএনপির শীর্ষ নেতারা সম্প্রতি ভারত সফর করেও দেশটির সমর্থন প্রত্যাশা করেছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু গত জুন মাসে ভারত সফর করেছেন। ভারতে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে তারা আগামী জাতীয় নির্বাচনে সহযোগিতা ও সমর্থন প্রত্যাশা করেছেন।
এদিকে পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই বলা হয়েছে, বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় তারা। নেতৃত্ব নির্বাচনে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলনও তারা দেখতে আগ্রহী। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক হয়, সেটিই তারা প্রত্যাশা করেন।
অবশ্য বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে সমালোচনা করে আসছে আওয়ামী লীগ। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, কোনো বিদেশি শক্তি দেশে কাউকে ক্ষমতায় বসাতে পারবে না। জনগণের প্রতি আস্থা থাকলে বিএনপির নেতারা নালিশ করে ছোট মানসিকতার পরিচয় দিতে পারতেন না। এর মধ্যে দিয়ে দেশের জনগণকে অসম্মান করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৮
টিআর/এসএইচ