গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কী ধরনের দাবি তুলে ধরবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ঐক্যফ্রন্টের কোনো নেতাই প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাচ্ছেন না। তারা বলছেন, আমাদের দাবি দেওয়া আছে।
ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বুধবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, আমরা চাই জাতীয় স্বার্থ নিয়ে সংলাপ হোক। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ওই অনুষ্ঠানে বলেন, আমরা আশা করবো প্রধানমন্ত্রী সত্যিকার অর্থেই একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, মানুষের অধিকারগুলোকে ফিরিয়ে দেওয়া, একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণ করবার জন্য যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, এই সংলাপের মধ্য দিয়ে সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করবেন। আমরা সাত দফা দাবি দিয়েছি, তা অবশ্যই পূরণ করবেন। এছাড়া বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের কোনো সমাধান হবে না।
ঐক্যফ্রন্টের সাত দফায় রয়েছে— সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার গঠন, খালেদা জিয়াসহ রাজবন্দিদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার নিশ্চিত করা, যোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করা, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, শিক্ষার্থী, সাংবাদিকসহ সবার বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সব কালো আইন বাতিল, নির্বাচনের ১০ দিন আগে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন, দেশি ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগ ও গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ আরোপ না করা এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে ফলাফল চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রেখে নতুন কোনো মামলা না দেওয়া।
জানা যায়, নিজেদের দেওয়া সাত দফার ভিত্তিতেই আলোচনা করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এক্ষেত্রে নিরপেক্ষ সরকারের ওপরই বেশি জোর দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি সরকার চাইলে নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখাও দিতে পারেন তারা। খালেদা জিয়ার সাজার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তুলে ধরবেন। সাত দফা দাবি না মানলে বিকল্প ভাবনা কি হবে সেটাও চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। অন্যদিকে সরকার সাত দফা দাবি এড়িয়ে ফ্রন্টকে বিকল্প প্রস্তাব দিতে পারে।
জেএসডি সভাপতি আ স মআব্দুর রব নিজেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র পরিচয় দিয়ে মঙ্গলবার রাতে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ সাদরে গ্রহণ করেছি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা৭টায় গণভবনে যাবো। জাতি আশা করে এই সংলাপের মাধ্যমে আগামী দিনে একটা সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। কোনো সংলাপ ব্যর্থ হয়নি। এ সংলাপে সাত দফাসহ সবকিছু নিয়ে আলোচনা হবে।
সংলাপে ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব দেবেন ড. কামাল হোসেন। এছাড়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জেএসডি সভাপতি আসমআবদুর রব, গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বক্তব্য রাখতে পারেন। বাকিরা তাদের সহায়তা করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৮
এমএইচ/এএ