ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ফেনী-১ আসনে ভোটের মাঠে ত্রিমুখী লড়াই

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৮
ফেনী-১ আসনে ভোটের মাঠে ত্রিমুখী লড়াই নির্বাচনী গণসংযোগে মহাজোটপ্রার্থী শিরিন আখতার

ফেনী: ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলা ও পৌরসভা নিয়ে গঠিত ফেনী-১ সংসদীয় আসন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে ভোটের মাঠে ত্রিমুখী লড়াই হবে বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা। ইতোমধ্যেই জমজমাট হয়ে উঠেছে ত্রিমুখী প্রচার-প্রচারণা।

নির্বাচনী মাঠে নৌকা প্রতীক নিয়ে জাসদ (ইনু) সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম মজনু, আপেল প্রতীক নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আবদুল্লাহ প্রায় সমান মাত্রায় সরব রয়েছেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পৈত্রিক ভিটা হওয়ায় ফেনী-১ আসনকে বলা হয় বিএনপির শক্ত ঘাঁটি।

১৯৯০, ১৯৯৬, ২০০১ ও সর্বশেষ ২০০৮ সালে আসনটি থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন খালেদা জিয়া। আসনটিতে ১৯৯০ থেকে ২০১৪, দীর্ঘ চব্বিশ বছরে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী জয় পাননি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হন।  
নির্বাচনী প্রচারণায় স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিএনপিপ্রার্থী মজনু। দু'টি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারান্তরীণ থাকায় খালেদা জিয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাঠে নেই। তার পরিবর্তে কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল আলম মজনু খালেদা জিয়ার মতো ভোট পাবেন কিনা সেই শঙ্কা রয়েছে খোদ বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যেই।

এ সুযোগে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে মহাজোট মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাসদের (ইনু) সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার। তিনি মনে করছেন বিগত পাঁচটি বছর এ আসনের মানুষের সুখে-দুঃখে ও জনপদের উন্নয়নে মাঠে ছিলেন। এ এলাকার মানুষ আর স্বাধীনতাবিরোধীদের দোসরদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না। জনপদের উন্নয়নে তারা নৌকাতেই ভোট দেবেন। জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী এ জাসদ নেত্রী।

তবে তার এ শতভাগ আশাবাদের পরেও নৌকার জয়ের ব্যাপারে শঙ্কার কারণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য দলের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আবদুল্লাহ। এ আসনের ফুলগাজী ও পরশুরামের সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন শেখ আবদুল্লাহ এমপি না হয়েও বিগত ৫ বছর এলাকার অনেক মসজিদ-মাদ্রাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন কাজ করেছেন। নির্বাচনী মাঠ ঘুরে দেখা যায়, মহাজোট নৌকা প্রতীকের প্রার্থী দিলেও তিনটি উপজেলার আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা শেখ আবদুল্লাহ’র প্রচারণায় মাঠে রয়েছেন।  
নির্বাচনী গণসংযোগে স্বতন্ত্রপ্রার্থী শেখ আবদুল্লাহশেখ আবদুল্লাহ বলেন, শিরীন আখতার বিগত ৫ বছর সংসদ সদস্য থাকলেও এ জনপদের উন্নয়নে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারেননি। তাই এ আসনের আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী এবং সাধারণ ভোটাররা আর তাকে চান না।

মহাজোটের প্রার্থী এবং আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর দ্বন্দের কারণে নিজেকে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন বলে মনে করছেন বিএনপি প্রার্থী রফিকুল আলম মজনু। তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এ আসনে বারবার নির্বাচিত হয়েছেন। আমি তার প্রতিনিধি হয়ে এখানে এসেছি, মানুষ আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করে খালেদা জিয়াকেই নির্বাচিত করবে।

এছাড়াও আসনটিতে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) শাহরিয়ার ইকবাল (টেলিভিশন), ইসলামী আন্দোলনের কাজী গোলাম কিবরিয়া (হাতপাখা), খেলাফত আন্দোলন আনোয়ার উল্লাহ ভূঁঞা (বটগাছ), জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী (উদীয়মান সূর্য), ইসলামী ফ্রন্টের কাজী মাওলানা নুরুল আলম (মোমবাতি), মুসলিম লীগের তারেকুল ইসলাম (হারিকেন)।

ফেনী-১ আসনে ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১০৬টি। মোট ভোটার ৩ রাখ ৫ হাজার ৫৫ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ লাখ ৪৯ হাজার ৯৩৩ জন, পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৫ হাজার ১২২ জন।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৮
এসএইচডি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।