দুইজনের মধ্যে একজন হলেন বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি হাবিবর রহমান। আরেকজন হলেন একই আসনের বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী সাবেক এমপি গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ।
শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের মামুরশাহী গ্রামে মরহুম আব্দুল হামিদ মাস্টারের কুলখানিতে দেখা গেলো এমন দৃশ্য।
এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও শেরপুর পৌরসভার মেয়র আব্দুস সাত্তার, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কেএম মাহবুবার রহমান হারেজ, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবলু, আওয়ামী লীগ নেতা মুনসী সাইফুল বারী ডাবলুসহ দুই দলের অনেক সিনিয়র-জুনিয়র নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন এ কুলখানি অনুষ্ঠানে।
স্থানীয় মামুরশাহী দাখিল মাদ্রাসা সংলগ্ন মাঠে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেন দুই দলের এমপি প্রার্থী।
আয়োজক মরহুমের ছেলে মির্জাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল হাই সিদ্দিকী হেলাল বাংলানিউজকে জানান, তার বাবা আব্দুল হামিদ পেশায় ছিলেন একজন শিক্ষক। নিয়মানুযায়ী চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। চাকরিতে থাকা ও অবসরের পর তিনি এলাকায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এর মধ্যে অনেকগুলো নিজ হাতে গড়েন। আবার অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে সার্বিক সহযোগিতা করেন।
তিনি আরো জানান, এসব কারণে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে বাবার সখ্য গড়ে ওঠে। তারা সবাই তাকে ভালোবাসতেন। প্রায় আট হাজার মানুষ তার বাবার কুলখানিতে অংশ নেন। তাদের মধ্যে দুই দলের এমপি প্রার্থী ছাড়াও এ দুই দলের অনেক নেতাকর্মীও ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ সময় ধরে দেশে প্রধান দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম বৈরিতা চলে আসছে। কেউ যেন কারো মুখ দেখতে চায় না। অথচ কুলখানিতে দেখা গেলো ব্যতিক্রম দৃশ্য। যা স্থানীয় মানুষের মনে স্বস্তি সৃষ্টি করেছে।
রফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বাংলানিউজকে বলেন, এমন দৃশ্য যদি সব সময় দেখা যেতো তাহলে কতই না ভালো হতো। নেতারা মিলেমিশে থাকলে দেশে-সমাজে বিশৃঙ্খলা হতো না। মানুষ শান্তিতে থাকতো। মানুষের জন্য কতই না মঙ্গল হতো।
মাহবুবুর রহমান নামের এক প্রবীণ ব্যক্তি বাংলানিউজকে বলেন, আগে সমাজের মুরুব্বিদের সবাই সম্মান করতেন। গুণিজনদের সম্মান করা হতো। এক কথায় সবাই সবাইকে সম্মান করে চলতেন। কিন্তু কালের আবর্তে এসব যেন মানুষের মধ্য থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে।
তিনি আরো বলেন, আগে সমাজে কোনো সমস্যা দেখা দিলে সব দলের নেতাকর্মীরা মিলেমিশে তা সমাধান করে দিতেন। অনেক ভয়াবহ ঘটনা রোধ করা হতো সামাজিকভাবে। কিন্তু এখন দলগুলোর মধ্যে বিরোধ এতোটাই চরম আকার ধারণ করেছে যে কেউ কারো মুখ পর্যন্ত দেখতে চায় না। এহেন পরিস্থিতিতে অনেক দিন পর দুই দলের এমপি প্রার্থীকে একসঙ্গে দেখে মনটা ভরে গেলো।
তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে ফয়সাল আহম্মেদ নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমাদের গুরুজনরা এভাবে বসবাস করুণ এটাই আমাদের চাওয়া। তাহলেই সমাজ ও দেশে অবশ্যই শান্তি বিরাজ করবে। তাদের কাছে সব সময় এমনটাই আমাদের চাওয়া।
বাংলাদেশ সময়: ০৬০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৮
এমবিএইচ/এসআই