ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বাজেটে আয়-ব্যয়ের মধ্যে বিশাল ফারাক: জাপা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৬ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৯
বাজেটে আয়-ব্যয়ের মধ্যে বিশাল ফারাক: জাপা সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন জাপার সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। ছবি: বাংলানিউজ গোলাম মোহাম্মদ কাদের। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় বাজেট ২০১৯-২০ অর্থবছরে ঘোষণা করেছে সরকার। বাজেটের আক‍ার ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এই বাজেটে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। বাজেটের রাজস্ব আয় এবং উন্নয়ন ব্যয়- এ দু’টির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।     

শনিবার (১৫ জুন) রাজধানীর বনানীতে জাপার কার্যালয়ে বাজেট ঘোষণা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন জিএম কাদের। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাপার মহাসচিব ও সদস সদস্য (এমপি) মসিউর রহমান রাঙ্গা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা প্রমুখ।

       

জিএম কাদের বলেন, বাজেটে ঘাটতি বেশ বড় (১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা)। সরকারকে বড় অংকের অর্থ রাজস্ব খাত থেকে আয় করতে হবে। আবার নির্ধারিত খাতে বড় ধরনের ব্যয়ও করতে হবে। আয়ের প্রশ্নে আমরা চাই, অপেক্ষাকৃত অবস্থাপন্ন জনগোষ্ঠী থেকে বেশি হারে রাজস্ব আদায়ের ব্যবস্থা ও স্বল্প আয়ের মানুষের ঘাড়ে কম দায় চাপানো হোক। অর্থাৎ প্রত্যক্ষ কর যেমন আয়কর থেকে যতোদূর সম্ভব রাজস্ব আদায় হোক ও পরোক্ষ কর (যেমন আমদানি শুল্ক ইত্যাদি) থেকে কম অংশ আয়ের ব্যবস্থা করা হোক।  

তিনি বলেন, বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের মধ্যে আয়কর ৩৫ শতাংশ + মূল্য সংযোজন কর ৩৭ দশমিক ৮ শতাংশ (এটাকেও প্রত্যক্ষ করা বলা যায়) + আমদানি শুল্ক ২৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে সংশয় আছে। আয়কর থেকে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে এবং যে পদ্ধতির মাধ্যমে করা হবে বলা হয়েছে, তা বর্তমান আয়কর বিভাগের অপর্যাপ্ত অবকাঠামো ও লোকবল ইত্যাদির কারণে প্রায় অসম্ভব, অনেক বিশেষজ্ঞের মতে। ফলে আয়কর থেকে মোট আদায়ের যে অংশ আশা করা যাচ্ছে তার থেকে অনেক কম আয় হবে। একই কথা মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাটের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে আয় ও ব্যয়ের মধ্যে একটি বিশাল ফারাক আছে, যা বাজেট ঘাটতি ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। এ ঘাটতি মেটানোর জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে, ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ (৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি) + বিদেশি ঋণ ও সাহায্য (৬৩ হাজার ৮৪৮ কোটি) + ব্যাংকের বাইরে (সঞ্চয় পত্র ইত্যাদি) থেকে নেওয়া ঋণ (৩০ হাজার কোটি)  গ্রহণ করা হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট চলছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে জানা যায়। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, সরকারের অধিক হারে ঋণ গ্রহণ। ফলে বেসরকারি খাতে নতুন উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী যথেষ্ট ঋণ পাচ্ছেন না। বিনিয়োগ ও ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সমস্যা হচ্ছে।  

এবার ঘাটতি মেটাতে সরকার যখন আবার ব্যাংক ঋণের সাহায্য নেবে তা বিরাজমান সংকটকে আরও ঘনীভূত করতে পারে উল্লেখ করে কাদের বলেন, দেশে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সংকট বেকার সমস্যা। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে বাধা হোক এ ধরনের পদক্ষেপ যে কোনোভাবেই পরিহার করতে হবে বলে মনে করি। ব্যাংকের বাইরে থেকে নেওয়া ঋণ, অর্থ, সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে নেওয়া। এ ধরনের ঋণের খরচ অধিক ও প্রভাব সুদূরপ্রসারী। এ ধরনের ঋণ গ্রহণের আগে বিষয়টি ভালোমতো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা বাঞ্ছনীয়। এছাড়া, মোট ঘাটতি আরও অধিক হওয়ার আশঙ্কা আছে।

জিএম কাদের বলেন, রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে অর্থাৎ ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, তা পূর্ববর্তী অর্থবছরের (২০১৮-১৯) সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অর্থাৎ ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার চেয়ে প্রায় ১৬ শতাংশ বেশি। এ লক্ষ্যমাত্রা হয়তো অর্জন সম্ভব, তবে না হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৯
এসই/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।