ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ভয়াবহ পরিস্থিতির দায় সরকারকেই বহন করতে হবে: মির্জা ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৪ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০২০
ভয়াবহ পরিস্থিতির দায় সরকারকেই বহন করতে হবে: মির্জা ফখরুল

ঢাকা: করোনা মহামারির ভয়াবহ পরিস্থিতির দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বুধবার (০৩ জুন) বিকেলে নাগরিক ঐক্যের ৮ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের মিলনায়তনে আলোচনায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন,  যারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব জোর করে নিয়েছেন তারা জনগণকে কোনো মূল্য দেন না, তাদের কাছে অনেক বেশি মূল্য হচ্ছে ব্যবসা, মূল্য হচ্ছে তাদের সো-কলড প্রবৃদ্ধি বাড়ানো।

কোনোটাই বাড়বে না, সব কিছু নিচে নেমে যাচ্ছে এবং ভয়াবহ পরিণতির দিকে যাচ্ছে। এই অবস্থা তারা তৈরি করেছে, এই দায়-দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।

সরকারি ছুটি তুলে নেওয়ার সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, সরকার যে টেকনিক্যাল কমিটি করে দিয়েছে সেই কমিটি বলছে যে, এই মুহূর্তে সরকারি ছুটি তুলে নেওয়াটা একটা বিপদজনক অবস্থা হবে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর যিনি ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. আবদুল্লাহ সাহেব তিনিও বলেছেন যে, এটা খুব ভুল সিদ্ধান্ত হচ্ছে, এটা একটা সুইসাইডাল সিদ্ধান্ত।

তিনি বলেন,  আমি জানি না যে, এখান থেকে কীভাবে সরকার বা এদেশের মানুষ বেরিয়ে আসবে। সমগ্র বিশ্ব যখন এই সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো ওষুধ ও ভ্যাকসিন আবিস্কার হয়নি এবং হওয়াও ডিফিকাল্ট। এর মধ্যে আন্তরিকতার মধ্য দিয়ে সকলের সাথে আলোচনা করে, যদি পরামর্শ করে পদক্ষেপ নেওয়া হতো তাহলে হয়তো এই অবস্থা নাও হতে পারতো। দুর্ভাগ্য আমাদের যারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব জোর করে নিয়েছেন তারা জনগণকে মূল্য দেন না। তাদের কাছে অনেক বেশি মূল্য হচ্ছে ব্যবসা।

আলোচনায় অংশ নিয়ে জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব বলেন,  আজকে সমগ্র পৃথিবী ও মানবসভ্যতা হুমকির সম্মুখীন। করোনা মহামারির হাত থেকে এককভাবে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা সরকার বাঁচতে পারবে না। সমগ্র বিশ্ব সম্মিলিতভাবে বাঁচতে পারবে। যেহেতু সবাইকে বাঁচতে হবে, সবাইকেই সম্পৃক্ত করতে হবে। সব সামাজিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস ছাড়া এই কালে আর বাঁচা যাবে না। আমি বলব, করোনার এই ভয়াবহ দুর্দিনে আরও বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে বিদ্যমান শাসন কাঠামো পরিবর্তন করে সবাইকে নাগরিক ঐক্য পালন করতে হবে-এই প্রত্যাশা করছি।

সভাপতির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকার আমাদের সরকার নয়, ওরা আমাদের কাজ করবে না। এরা পুরো ব্যবসায়ীদের সরকার। এখন এই শাসকদের কাছে নিরাপদ নই, এখন যারা ক্ষমতা চালাচ্ছে তাদের কাছে আমরা নিরাপদ নই। যে পুলিশ এদের ক্ষমতায় থাকার জন্যে দুই বছর আগে জান দিয়ে দিয়েছে, মানুষের ভোট কেড়ে নিয়েছে, পারলে অন্যের জান কেড়ে নেয়। ওই পুলিশের জান সরকার রক্ষা করতে পারেনি। যে ডাক্তার চিকিৎসা করছেন এত বিপদের মধ্যেও ওদের পিপিই দিতে পারে না। অথচ এই পিপিই এক্সপোর্ট করে বেক্সিমকো যেন লাভ করতে পারে তার জন্যে কিন্তু গার্মেন্টস খুলে দেওয়ার বিশেষ বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সরকার ডাক্তারদের জন্য না, পুলিশদের জন্য না, মালদার যারা টাকা আছেন তাদের জন্যে।

সংগঠনের সমন্বয়কারী শহীদুল্লাহ কায়সারের পরিচালনায় ইন্টারেনেটের মাধ্যমে গণফোরামের সাবেক নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও গণসংহতির প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকিও বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আকবর খান ও মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০২০
এমএইচ/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।