ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে যারা মুছে ফেলতে চেয়েছিলেন, তারাই মুছে গেছেন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২০
ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে যারা মুছে ফেলতে চেয়েছিলেন, তারাই মুছে গেছেন

ঢাকা: বিরোধীদলের নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে যারা ইতিহাস থেকে মুছে দিতে চেয়েছিলেন, তারাই আজ ইতিহাস থেকে মুছে গেছেন। এটাই ইতিহাসের শিক্ষা।

রোববার (১৫ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতির পিতার জীবন, কর্ম, আদর্শ, দর্শনের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

রওশন এরশাদ বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীন দেশ দিয়ে গেছেন। প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু ছিলেন অগ্রসৈনিক। বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা ও সোনার মানুষ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খলার আবদ্ধ, অন্যের দ্বারা শোষিত ও শাসিত বাঙালিকে প্রথমবারের মতো স্বাধীনতা, শোষণ থেকে মুক্তি দেওয়া নিজের ভাগ্য নিজে গড়ার অধিকার আদায়ের উদ্যোগ নেওয়া। এর চাইতে মহৎ কর্ম আর কি হতে পারে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার সবর্ণ জয়ন্তীকে সামনে রেখে আজকে যদি আমরা নিজেদের দিকে তাকাই। তাহলে অবশ্যই বলতে হবে সেই আকাঙ্খিত মুক্তির চূড়ান্ত গন্তব্য থেকে আমরা অনেক দুরে অবস্থান করছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্ব গত ১১ বছর ধরে বাংলাদেশ মুক্তির পথ দুর্বার গতিতে অতিক্রম করার চেষ্টা চলছে। উল্লেখযোগ্য বহু অর্জন আমাদের আছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফসহ বহু বড় বড় আর্থিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নজর এখন বাংলাদেশের দিকে। বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হারে ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে পদ্মাসেতুর মতো বৃহৎ একটি প্রকল্প। বাস্তবায়ন হচ্ছে বঙ্গবন্ধু টানেল। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ দশটি মেগা প্রকল্প। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট আবর্তিত হচ্ছে পৃথিবীর কক্ষপথে। তা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুর নির্ধারিত মুক্তির জন্য এখনো বন্ধুর পথ হাটতে হবে। সেই পথ অত্যন্ত কঠিন ও সময়সাধ্য।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেভাবে দেশ চালিয়ে যাচ্ছেন। ভাবতে আশ্চর্যই লাগে। আমরা সংসদ থেকে যখন বাসায় যাই। টায়ার্ড হয়ে শুয়ে পড়ি। আর প্রধানমন্ত্রী দিনরাত ২৪ ঘণ্টা কাজ করেই চলেছেন। এটা অবাস্তব এবং মনে হয় যে সাংঘাতিক অবস্থা। তাহলে কি করে তারপক্ষে সম্ভব। আমি সেটাই ভেবে আশ্চর্য হই। আমরা যদি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ সম্বলিত জাতীয় মানব কাঠামোতে তৈরি করতে পারি। তাহলে দুর্নীতিমুক্ত, ন্যায় ভিত্তিক, সু-শৃঙ্খল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিভাজনমুক্ত শক্তিশালী রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে বড় কোনো বাধা আর থাকবে না সামনে। একবিংশ শতাব্দীর এ সময়ে এসে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রাসঙ্গিক আমাদের জন্য। তিনি চেয়েছিলেন আমাদের জন্য শোষনহীন, বৈষম্যহীন উন্নত সমাজ গড়তে। একই সঙ্গে তিনি লালন করতেন উন্নত গণতান্ত্রিক চেতনা। তার আদর্শের আলোকে আজ গড়ে তুলতে হবে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে।

বিরোধীদলের নেতা বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার অধিকারী। আমরা রাজনীতি করি। আমাদের ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক মতবাদ। রাজনৈতিক দর্শন ও দলীয় আদর্শ থাকবে। সেটাই স্বাভাবিক। এটা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। কিন্তু যে মানুষটির জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। বাঙালি পেতো না মুক্তির স্বাদ। যে মানুষটির দেশ প্রেম ছিল প্রশ্নাতীত। তিনি কেবল মানুষকে ভালোবাসতেন। মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা, দেশের জন্য সীমাহীন ত্যাগ তিতিক্ষা। সর্বপরি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র উপহার দিয়ে যাওয়া আমাদের জন্য তার শ্রেষ্ঠ উপহার। স্বাধীন দেশে আজও আমরা সেই আলোতেই পথ চলি। যেপথ যতই ভিন্ন হোক, আলো কিন্তু তারই।

বাংলাদেশ সময়: ২১১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২০
এসই/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।