যশোর: আগামী ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে যশোর পৌরসভা নির্বাচন। তার আগেই বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মেয়র মারুফুল ইসলাম নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে যশোর প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে পৌর নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে দাঁড়ানো ও সাবেক যশোর পৌর মেয়র মারুফুল ইসলাম।
মারুফুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সেই কারণে ভোটে থাকা না থাকা একই কথা। কেন্দ্রীয়ভাবে বিএনপি আসন্ন স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু যশোর পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল যেহেতু আগেই হয়ে গেছে সেই কারণে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত যশোর পৌরসভার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে কিনা তা নিয়ে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছিল। এমন অবস্থায় জেলা বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ অন্য নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। তারা যশোর পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নেওয়া না নেওয়া সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত স্থানীয়ভাবে নেওয়ার কথা বলেন। সে পরিপ্রেক্ষিতে যশোর পৌরসভা নির্বাচন বর্জনের সিন্ধান্ত নিয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, এখন সরকারের পতন, পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশনের বিদায়ের দাবিই মুখ্য। এ দাবিতে আন্দোলন গড়ে তুলে নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির জন্য বিএনপি আন্দোলন করছে। বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে দেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। যা দেশে চলমান পৌরসভা নির্বাচনের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে বিএনপি এ সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। ফলে যশোর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী রাখার কোনো যুক্তি নেই। বিএনপি দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থীদের ব্যাপারে কোনো সিন্ধান্ত হয়নি। তারা ইচ্ছে করলে ভোটে থাকতেও পারেন, সরে যেতেও পারেন।
আর এসব বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণি খান পলাশ বলেন, কে ভোট করলো না করলো ওটা দেখার বিষয় না। মূল কথা হলো বিএনপি জনগণ থেকে অনেক দূরে চলে গেছে। জনগণ তাদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাই তারা ভোট বর্জনের নাটক করছে। আওয়ামী লীগের উন্নয়ন দেখে দেশের মানুষ বর্তমানে নৌকাকেই উন্নয়নের মার্কা হিসেবে ধরে নিয়েছে। জনগণ জানে নৌকায় ভোট দিলে দেশে উন্নয়ন হয়। সেই উন্নয়নের মার্কা বাদে বিএনপিকে জনগণ ভোট দেবে না। তাই তারা ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছে।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইসহক, দেলোয়ার হোসেন খোকন, মিজানুর রহমান খান, গোলাম রেজা দুলু, আব্দুস সালাম আজাদ, মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু প্রমুখ।
যশোর পৌরসভার সীমানা বৃদ্ধি ও সেসব এলাকার বাসিন্দাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করা নিয়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট দায়ের করা হয়। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন স্থগিতের আদেশ দেন আদালত। এরপর আদালতের নির্দেশে নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। পরে আগামী ৩১ মার্চ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। যশোরের পৌরসভায় চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার তালিকায় ৩ মেয়র, ১৩ সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ও সাধারণ কাউন্সিলরে ৪০ জন নির্বাচনে অংশ নেবেন। মেয়র পদে রয়েছেন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা হায়দার গণি খান পলাশ, বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মারুফুল ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আলী সর্দার।
বাংলোদেশ সময়: ১৪৫১ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২১
ইউজি/আরবি