ঢাকা: চলতি বছরের ২৬ মার্চ থেকে কয়েকদফা দেশজুড়ে তাণ্ডবে জড়িত হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের পরিপ্রেক্ষিতে আবারও স্বরাষ্টমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সংগঠনটির নেতারা।
মঙ্গলবার (৪ মে) রাতে ধানমন্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে সাক্ষাতে তারা হেফাজত নেতাদের গ্রেফতার বন্ধসহ চারদফা দাবি তুলে ধরেন।
এদিন রাত ৯টা ২০মিনিটের দিকে ধানমন্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে প্রবেশ করেন হেফাজতের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির মহাসচিব নূরুল ইসলাম জিহাদীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল। তারা মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে রাত ১২টার দিকে বাসা থেকে বের হন।
এ সময় মন্ত্রীর কাছে তুলে ধরা হেফাজতের দাবিগুলো-হেফাজতে ইসলামের গত আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে গ্রেফতার হওয়া আলেম-ওলামা ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া, আলেম-উলামা ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের গ্রেফতার-হয়রানি আতঙ্ক থেকে মুক্তি দেওয়া, ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের নামে যে মামলাগুলো হয়েছে পূর্ব আলোচনা অনুযায়ী এ সেগুলো প্রত্যাহার করা এবং দ্রুত কওমি মাদরাসাগুলো খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা।
আরও পড়ুন>>>আবারো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় গেলেন হেফাজত নেতারা
মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে দাবি করে হেফাজত নেতারা জানান, হেফাজতের গত আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে গ্রেফতারকৃত আলেম-ওলামা ও ধর্মপ্রাণ সাধারণ মুসলিমদের দেশব্যাপী গ্রেফতার অভিযান এখনও অব্যাহত রয়েছে। ফলে পবিত্র রমজান মাসে ইবাদত-বন্দেগি করতে না পেরে অজানা আতঙ্কে দিন পার করছেন আলেম-ওলামা ও সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষ।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে গ্রেফতার-আতঙ্ক ও হয়রানি থেকে তাদের মুক্তি দেওয়ার আবেদন করা হয়। বিশেষ করে চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গণগ্রেফতার চলছে। এতে করে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। রমজান মাসে আলেম-ওলামা ও সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের হয়রানি বন্ধ করতে মন্ত্রীর কাছে বিশেষ অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মন্ত্রীর বাসভবন থেকে বেরিয়ে নুরুল ইসলাম জিহাদী বলেন, আমাদের দাবিগুলো মন্ত্রীকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। তিনি আমাদের কথা শুনেছেন, আশ্বাসও দিয়েছেন।
এ সময় প্রতিনিধি দলে আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজী, মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি জসিমউদ্দিন প্রমুখ।
এর আগে হেফাজত নেতারা কয়েকদফা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাতে তারা সংগঠনটির নেতাদের গ্রেফতার বন্ধের দাবি জানান। তবে মন্ত্রীর পক্ষ থেকে বরাবরই জানানো হয়েছে, সহিংসতায় যারা জড়িত ছিলেন তাদেরকেই গ্রেফতার করা হচ্ছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের বিরোধিতার জেরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাণ্ডবের পর সরকার হেফাজতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যায়। দেশজুড়ে চলা গ্রেফতার অভিযানের মধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে সমঝোতার প্রস্তাব দেয় হেফাজত নেতারা।
গত ২৬ এপ্রিল রাতে জুনায়েদ বাবুনগরীর নেতৃত্বধীন হেফাজতের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। ওই রাতে আবার ৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির ঘোষণা করা হয়। আহ্বায়ক কমিটিতে প্রধান উপদেষ্টা করা হয় আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীকে, আর আমিরের দায়িত্বে রাখা হয় আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১৬ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০২১
পিএম/এএটি