ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘খালেদা জিয়ার স্লো পয়জনিং হলে দায়ী বিএনপি’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২১
‘খালেদা জিয়ার স্লো পয়জনিং হলে দায়ী বিএনপি’ ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খালেদা জিয়ার স্লো পয়জনিং যদি হয়ে থাকে তাহলে সেটা বিএনপি করেছে। সরকার বা আওয়ামী লীগ কেন করতে যাবে? হুকুমের আসামি হলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হবেন।

শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সম্পাদক মন্ডলীর সভার শুরুতে দেওয়া বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়ার আশেপাশে বিএনপির লোকজন ঘোরাঘুরি করে, তারাই পাহারা দেয়৷ সেখানে তো লীগের কেউ যায় না।

বিএনপির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার কোনো ষড়যন্ত্র আপনাদের আছে কিনা, সেই জন্য কি আগেই এ অভিযোগ তুলছেন?

কাদের বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই দেশের সংবিধান ও আইন দ্বারা দেশ পরিচালিত হচ্ছে। দেশের প্রচলিত আইন ও সাংবিধানিক নিয়মনীতির মধ্যে যতটুকু সম্ভব তার সবটুকু সুযোগ খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন। শেখ হাসিনার মানবিক হৃদয়ের কল্যাণে একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি খালেদা জিয়া বাসায় থাকছেন। দেশি বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্ববধানে চিকিৎসা নেওয়ার সর্বোচ্চ সুযোগ পাচ্ছেন। হতে পারেন খালেদা জিয়া বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু আইনের চোখে তিনি একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তার বর্তমান পরিচয় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।

তিনি বলেন, ফখরুল সাহেব বলেছেন, বেগম জিয়াকে নাকি স্লো পয়জনিং করা হচ্ছে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করতে চাই। দণ্ডপ্রাপ্ত ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসাবে আজকে যে সুবিধা গ্রহণ করছেন বেগম জিয়া। এটা প্রধানমন্ত্রীর উদারতার কারণে। তার পাশে থাকেন আপনারা, ফখরুল সাহেবরা। তাকে যা খাওয়ানো হয়, তা পরিবারের লোকই খাওয়ায়। তার আশপাশে সর্বক্ষণ ঘোরাফেরা করে বিএনপির লোকরা। আওয়ামী লীগ কিংবা সরকারের কেউ তার পাশে থাকে না। তার ব্যক্তিগত পছন্দের চিকিৎসকরাই চিকিৎসা দিচ্ছেন। আশপাশের লোকরা সব বিএনপির, পরিবারের। স্লো পয়জনিং যদি করে থাকে তাহলে পাশের লোকেরাই করতে পারে। হুকুমের আসামি শেখ হাসিনা হবে না, হলে ফখরুল সাহেব আপনি হবেন।

মির্জা ফখরুলের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনাদের পছন্দের লোকেরা চিকিৎসা করাচ্ছেন। এখানে আওয়ামী লীগকে জড়াচ্ছেন কেন? শেখ হাসিনা কেন হুকুমের আসামি হবে?

বেগম জিয়াকে আপনারা মাইনাস করার জন্য স্লো পয়জনিং করছেন কিনা, সেই রকম কিছু করবেন বলেই কি উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে আওয়ামী লীগের ওপর, শেখ হাসিনার ওপর দোষ চাপিয়ে যাচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি নেতারা প্রধানমন্ত্রীর উদরতাকে প্রতিহিংসা বলতে দ্বিধা করছেন না। বিএনপির কৃতজ্ঞতাবোধ নিয়ে জনগণ প্রশ্ন তুলে। কিন্তু এ দেশের রাজনীতিতে তারা প্রতিহিংসার জন্ম দিয়েছেন। আজকে মির্জা ফখরুল সাহেব বড় বড় কথা বলেন। দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই। কারও চিকিৎসার নামে জনগণকে জিম্মি করা যাবে না। কোন ইস্যু সৃষ্টি করে শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গ, নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করলে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ তা প্রতিহত করবে।

যে কোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেও প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, দেশ বিরোধী এ ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তকে প্রতিহত করতে সারাদেশের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থান ও সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে। যারা দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করবে। আমরা তাদের সমুচিত জবাব দেবো।

মির্জা ফখরুলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বেগম জিয়ার জন্য এখন এত মায়াকান্না কাঁদেন। কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জন করেন। তার জন্য দেখবার মতো কার্যকর ও অর্থবহ একটা মিছিল রাজপথে করার দুঃসাহস আপনাদের ছিলো না। এটা দেখোতে পারেননি। কোন মুখে তার জন্য মায়াকান্না কাদছেন, লজ্জা করে না? খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারের কোন দায় নেই। এর দায় বিএনপিকেই নিতে হবে। মির্জা ফখরুল সাহেবদের নিতে হবে।

সম্পাদক মন্ডলীর এ সভায় সভাপতিত্ব করেন ওবায়দুল কাদের। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আফজাল হোসেন, হাবিবুর রহমান সিরাজ, অসীম কুমার উকিল, আবদুস সোবহান গোলাপ, ওয়াসিকা আয়শা খান, শাম্মী আহমেদ, ফরিদুন্নাহার লাইলী, বিপ্লব বড়ুয়া, দেলোয়ার হোসেন, আমিনুল ইসলাম, সায়েম খান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২১
এসকে/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।