বরিশাল: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মীয় রাজনীতির পরাজয় ঘটিয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির হাত ধরে সেই সাম্প্রদায়িক শক্তির রাজনীতির পুনরুত্থান ঘটেছে বলে মনে করেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন।
শনিবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় বরিশাল জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
রাশেদ খান মেনন বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে তার প্রথম বক্তৃতাতেই বলেছিলেন, বাংলাদেশে আর ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা যাবে না। ধর্মনিরপেক্ষতাকে সংবিধানের অন্যতম মূলনীতি করেছিলেন। আজ ধর্মনিরপেক্ষতা কাগজে-কলমে ফিরে এসেছে কিন্তু ধর্ম নিয়ে রাজনীতি চলছে জোরেসোরেই। সাম্প্রদায়িকতার বিস্তার ঘটেছে রাষ্ট্র ও সমাজে।
তিনি আরও বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসবের সময় সাম্প্রদায়িক হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না। জিয়া-এরশাদ-খালেদা ও বর্তমান আমলেও ধর্ম নিয়ে রাজনীতির যে চর্চা হচ্ছে, বিভিন্ন ধর্মসভা ও ইউটিউবে ধর্মীয় বিদ্বেষ প্রচার করা হচ্ছে তারই ফলশ্রুতি এই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা। কিন্তু দুভার্গ্যজনকভাবে মূল বিষয় বাদ দিয়ে আমরা দোষারোপের রাজনীতি দেখেছি। বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হতে হলে তার আবশ্যিক ভিত্তি হতে হবে অসাম্প্রদায়িকতা। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর এটাই হোক আমাদের প্রত্যয়।
পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য মাহমুদুল হাসান মানিক বলেন, ভারতের কৃষকদের লড়াইকে ব্যর্থ করতে সে দেশের ক্ষমতাসীনরা সাম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টি করতে চেয়েছে। কিন্তু আন্দোলনকারী হিন্দু-মুসলিম-হরি-শিখ কৃষকরা তা ব্যর্থ করে দিয়েই সেই আন্দোলনে বিজয় অর্জন করেছে। তেভাগার লড়াইও বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদী সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাকে রুখে দিয়েছিল। এ দেশের কৃষক-শ্রমিকের লড়াই দিয়ে সাম্প্রদায়িকতা রুখতে হবে।
বরিশাল জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি নজরুল হক নীলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সাধারণ সভায় রাজনীতি ও সমাজে সাম্প্রদায়িকতা রুখতে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির অবস্থান ব্যাখ্যা করে বক্তব্য দেন পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড মাহমুদুল হাসান মানিক। আরও বক্তব্য রাখেন জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট টিপু সুলতান, মোজাম্মেল হক ফিরোজ, শাজাহান তালুকদার ও গোলাম হোসেন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০২১
এমএস/এমজেএফ