ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

নরসিংদীতে আ’লীগের সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২২
নরসিংদীতে আ’লীগের সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২

নরসিংদী: আধিপত্য বিস্তার ও গ্রামে ফেরাকে কেন্দ্র করে নরসিংদী রায়পুরার আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ জনে।  

রোববার (৩০ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টায় কিশোরগঞ্জের ভৈরব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মামুন মিয়া (৩০) নামে আরেকজনের মৃত্যু হয়।


 
এরআগে, রোববার দুপুরে রায়পুরার দুর্গম চরাঞ্চল বাশঁগাড়ী ও মির্জাচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে রুবেল মিয়া (৩২) নামে একজনের মৃত্যু হয়। সংঘর্ষে আহত হন কমপক্ষে ১০ জন। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে নূরুল হক (১৯) নামে একজনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। খবর পেয়ে রায়পুরা থানা পুলিশসহ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

নিহত মামুন মিয়া মির্জাচর ইউনিয়নের মির্জাচর গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে। তিনি মির্জাচর ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল মানিক সমর্থক। আর নিহত রুবেল মিয়া রায়পুরার মির্জাচর ইউনিয়নের মির্জাচর এলাকার মানিক মিয়ার ছেলে। তিনি মির্জাচরের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুকুল ইসলামের চাচাতো ভাই এবং গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত নূরুল হক বাশঁগাড়ী ইউনিয়নের বাঁশগাড়ি গ্রামের সাধন মিয়ার ছেলে।

জানা যায়, এলাকার আধিপত্য ও নির্বাচনী সংহিংসতার জের ধরে দীর্ঘদিন ধরে নরসিংদী রায়পুরার বাশঁগাড়ী ইউনিয়নের সদ্য সাবেক আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান আশ্রাফুল হকের সঙ্গে বাশঁগাড়ী ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান জাকির হোসেন রাতুলের দ্বন্দ্ব চলছিল। আর মির্জাচর ইউনিয়নে দ্বন্দ্ব চলছে মির্জাচর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুকুল ইসলাম ও বর্তমান চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল মানিকের মধ্যে। দ্বিতীয় ধাপের ১১ নভেম্বর নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকির হোসেন রাতুল বিজয়ী হওয়ার পর এলাকা ছাড়া হয়ে পড়ে সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আশ্রাফুল হক ও তার সমর্থকরা। এদিকে নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর পরাজয়ের পর মির্জাচর ইউনিয়নের ফারুকুল ইসলাম ও তার সমর্থকরাও গ্রাম ছাড়া হয়ে পড়েন।

প্রায় আড়াই মাস গ্রাম ছাড়া থাকার পর বাশঁগাড়ী ও মির্জাচরের নৌকা প্রতীকের লোকজন সম্মিলিত হয়। পরে রোববার সকালে প্রথমে তারা আশ্রাফুল হক ও তার সমর্থকদের নিয়ে বাশঁগাড়ী গ্রামে ফেরেন। এতে বাধা দেয় বাশঁগাড়ীর বর্তমান চেয়ারম্যান রাতুল সমর্থকরা। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এসময় নুরুল হক গুলিবিদ্ধসহ আরো ৫ জন আহত হন। পরে আশ্রাফুল হক ও তার সমর্থকরা গ্রামে ফেরার পর তাদের সহায়তা নিয়ে মির্জাচর ইউনিয়নের ফারুকুল ইসলামের সমর্থকরা মির্জাচর গ্রামে ফেরার চেষ্টা চালায়। ওই সময় মির্জাচরের নব-নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল মানিক সমর্থকরা বাধা দেয়। এসময় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে ফারুকুল ইসলামের চাচাতো ভাই রুবেল মিয়া গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। আহত হয় অরো ৫ জন। এদের মধ্যে মামুন মিয়ার হাত কেটে নেয় প্রতিপক্ষরা। গুরুত্বর আহতবস্থায় মামুন মিয়াকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ভৈরব হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল সাড়ে ৫টায় তার মৃত্যু হয়। এদিকে মির্জাচর ইউপি চেয়ারম্যান জাফর ইকবাল মানিক সমর্থকদের সঙ্গে মামলা সংঘর্ষ ও বাধা মুখে ফারুকুল সমর্থকরা গ্রামে ঢুকতে পারেনি। খবর পেয়ে রায়পুরা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
 
রায়পুরা থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) আতাউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সংঘর্ষে আরো একজনের মৃত্যুর খবর আমরা পেয়েছি। এ ব্যাপারে আমরা খোঁজ নিচ্ছি। এর আগে, সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

>>> নরসিংদীতে আ’লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ১

বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।