ঢাকা: বিএনপি দেশে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে একটি সাংবিধানিক ও নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের জন্য আন্দোলনের নামে সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সোমবার (২৯ আগস্ট) ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে এ কথা জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি দেশে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে একটি সাংবিধানিক ও নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এরই ধারবাহিকতায় সারাদেশে আন্দোলনের নামে তারা সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছে। একইভাবে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর কাছে দেশের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ধৈর্য নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। আমাদের দলের সভাপতি শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধারণ ও গণতান্ত্রিক ঔদার্য নিয়ে সহনশীল আচরণ করার নির্দেশনা দিয়েছেন। এ সুযোগে বিএনপি তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী মাঠে নামিয়ে রাজনৈতিক পরিবেশকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশে ক্রমাগত উস্কানি দিচ্ছে। যেসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ফৌজদারি মামলা রয়েছে তাদের মাঠে নামিয়ে বিএনপি ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, এদেশে হত্যা-ক্যু ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের প্রতিভূ এবং পৃষ্ঠপোষক হলো বিএনপি। বিএনপির জন্মই হয়েছে নিষ্ঠুর স্বৈরশাসনের গর্ভে। মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতাদের বক্তব্য ও রাজনৈতিক আচরণ দেখে মনে হয়, তারা তাদের অতীতের এই হীন কর্মকাণ্ডের জন্য অনুতপ্ত নয়; বরং তারা হত্যা ও খুনের রাজনীতিকে উস্কে দেওয়ার জন্য স্লোগান দেন- ‘৭৫-এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’! এবং ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে দুঃশাসনের অন্ধকার যুগে তারা বাংলাদেশকে ফিরিয়ে নিতে চায়।
তিনি বলেন, অন্ধকারের অপশক্তি বিএনপি সরকারে থাকা অবস্থায় যেমন রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছিল, অপরদিকে বিরোধীদলে থেকে আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে শত শত নিরীহ মানুষ হত্যা করেছে এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি শান্তি-শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। ক্ষমতায় থাকাকালে তারা ‘হাওয়া ভবন’ খুলে বাংলাদেশকে দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন ও স্বেচ্ছাচারিতার অভয়ারণ্যে পরিণত করেছিল; দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে টানা পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে লালন-পালন করে দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। সে কারণে বিএনপি যে কোনো নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে ভয় পায়। তাদের ষড়যন্ত্র ও অপকৌশল বাস্তবায়নের সম্ভাবনা না দেখলে তারা নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করে না। অন্যদিকে পলাতক আসামি তারেক রহমান ও বিএনপি হাওয়া ভবনের সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর দ্বারা বিদেশে অর্থপাচার করে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে ব্যবহার করছে; দেশের অগ্রগতি ও জনগণের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে ব্যয় করছে। সেই অবৈধ অর্থ ব্যবহার করে অপপ্রচার, গুজব, বিভ্রান্তি ছড়িয়ে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনা মহামারি ও ইউরোপে যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার ভয়াবহ অভিঘাতে বৈশ্বিক সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান সরকার যখন জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই সঙ্কট মোকাবিলায় নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে, তখন বিএনপি তথাকথিত আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে; দেশকে অস্থিতিশীল করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না। সরকার জনগণের জানমাল রক্ষা, জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০২২
এসকে/আরআইএস