ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

জাতীয় ‘খাদ্য সহায়তা তহবিল’ গঠন করুন: আ স ম রব 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২২
জাতীয় ‘খাদ্য সহায়তা তহবিল’ গঠন করুন: আ স ম রব  আ স ম রব। ফাইল ছবি

ঢাকা: সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ বা খাদ্য সংকটে জনমনে মারাত্মক ভীতি ও আশংকা সৃষ্টির প্রেক্ষিতে ‘খাদ্য নিরাপত্তাকে’ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব।

বুধবার (১৯অক্টোবর) গণমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।

 

তিনি বলেন, বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ক্ষুধা মেটানোর সক্ষমতায় বাংলাদেশের অবস্থান বেশ অবনতিশীল। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বৈশ্বিক সরবরাহ- খাদ্য, সার ও জ্বালানি সংকটে বিপর্যয়কর রূপ নিতে পারে, সর্বোপরি অর্থনৈতিক সংকট গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।  

‘বাংলাদেশে ৫ থেকে ৬ কোটি মানুষ জীবিকার সংকটে বিপর্যস্ত। ৬৪ শতাংশ মানুষ খাদ্য ক্রয়ের জন্য ঋণ নিয়েছেন, ৪২ শতাংশ পরিবারের জীবনযাত্রা ও খাদ্য পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে এবং ৬৮ শতাংশ মানুষ খাবার কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। প্রতিদিন মানুষের দুর্দশা বেড়ে চলছে। খাদ্য ও খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতিতে নিম্ন আয়ের মানুষ নানা ধরনের চাপ সামলাতে পারছে না এবং সংকট মোকাবিলায় তাদের সামর্থ্য হ্রাস পেয়েছে। ’ বলেন তিনি।  

আ স ম রব বলেন, জ্বালানি সংকট, খাদ্য উৎপাদনে ঘাটতি, ডলারের অস্থিরতা এবং মুদ্রাস্ফীতির সংকটে বাংলাদেশের খাদ্য পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। সরকার সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ না নিয়ে বারবার এই ভয়াবহতার কথা বলে জনগণকে উদ্বিগ্ন করে উন্নয়নের ফাঁকা বুলি আড়াল করতে চাচ্ছে। আসন্ন দুর্ভিক্ষকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে সরকার যেন তার কোন গোপন অভিলাষ চরিতার্থ করতে না পারে, সে বিষয়ে দেশবাসীকে সজাগ থাকতে হবে।

তিনি আরও বলেন, খাদ্য সংকট চরম বিপর্যয়ের নিকটবর্তী হওয়ার আগেই ১৭ কোটি মানুষের জীবন বাঁচানোর প্রশ্নটিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ, কৃষিবিদ, অর্থনীতিবিদ, ভূ-রাজনীতির বিশ্লেষকসহ পেশাজীবী বিশেষজ্ঞদের নিয়ে দ্রুত ‘জাতীয় খাদ্য কাউন্সিল’ গঠন অনিবার্য হয়ে পড়েছে।

বিশ্বজুড়ে খাদ্য সংকটের আলোকে অবিলম্বে জাতীয় ‘খাদ্য সহায়তা’ তহবিল গঠন করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। আরও বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। কৃষি জমি সুরক্ষা ও সর্বোচ্চ ব্যবহারের আওতায় আনতে হবে। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, সংরক্ষণ ও বিতরনে সমন্বিত আধুনিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। সার, ডিজেলের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।

‘সামাজিক সুরক্ষার আওতাকে আরও সম্প্রসারণ ও শক্তিশালী করতে হবে। পুষ্টিহীন শিশুদের সুষম খাবারের সংস্থান করতে হবে। জীবিকাবিহীন, বেকার কর্মক্ষম মানুষদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ব বাজার থেকে খাদ্য আমদানির ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক জোরদার করতে হবে। মুদ্রা বাজার স্থিতিশীল রাখতে বহুমুখী উদ্যোগ ও কৌশলগত পদক্ষেপ নিতে হবে। একমুখী উন্নয়ন দর্শন পরিহার করে মানব উন্নয়ন কেন্দ্রিক ‘গণমুখী ও অংশীদারিত্বমূলক উন্নয়ন দর্শন’ প্রবর্তন করতে হবে ‘ বলেন আ স ম রব।  

তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে না পারলে খাদ্য সংকট দেশের সামনে অনিবার্য হয়ে দাঁড়াবে, যা মোকাবিলা দুরূহ হয়ে পড়বে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২২
এমএইচ/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।