মিরসরাই: গত কয়েকদিন বিদ্যুতের অব্যাহত লোডশেডিংয়ে মিরসরাইয়ে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। উপজেলায় প্রতিদিন গড়ে ১৫-১৮ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে কবলে পড়ে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মাঝে।
সারাদিন, মধ্যরাত এমনকি ভোর রাতেও বিদ্যুতের নিরবিচ্ছন্ন `মিসকল` থেকে রেহাই পাচ্ছে না উপজেলার প্রায় ৪ লাখ মানুষ। স্থানীয়রা দিন এমনকি রাতেও ২-৪ ঘণ্টা পর পর পালাক্রমে আলোর মুখ দেখলেও তা ১০-১৫ মিনিটের বেশি স্থায়ী হচ্ছে না।
এর ফলে স্থবিরতা নেমে এসছে সরকারি-বেসরকারি সকল ক্ষেত্রে। বিদ্যুতের কারণে সেচ ফসলে পানি সরবরাহে চরম অনিশ্চিয়তার সৃষ্টি হওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে কৃষি খাতও। সম্প্রতি সময়ে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হলেও বিদ্যুতের কারণে লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।
এদিকে বিদ্যুতের সমস্যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পানি আর ভ্যাপসা গরম। উপজেলার বেশিরভাগ আবাসিক ভবন বৈদ্যুতিক মটরচালিত ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর নির্ভরশীল। লোডশেডিয়ের কারণে উপজেলার প্রায় ৩ হাজার আবাসিক ভবনে দৈনন্দিন গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত পানি ও বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহে নানা সমস্যার দেখা দিয়েছে।
তবে বিদ্যুতের এই বিপর্যয়কে নিয়মিত লোডশেডিংয়ের চোখেই দেখছেন কর্তৃপক্ষ। মিরসরাই পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিস কর্তৃপক্ষের দাবি বাবড়কুন্ড গ্রীড থেকে মিরসরাইয়ে বিদ্যুতের সরবরাহ আগের তুলনায় কমিয়ে দেওয়ায় উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহে কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
বাবড়কুন্ড গ্রীড কর্তৃপক্ষের দাবি শুকনো মৌসুমের শুরুতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন হলেও বর্তমানে তা অনেক কমে এসেছে। তাই চাহিদামতো বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না।
শুক্রবার ছুটির দিনে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকলেও দিবাগত রাত ১০টা পর্যন্ত মিরসরাইয়ের সর্বত্র ছিল বিদ্যুৎহীন।
পল্লী বিদ্যুৎ মিরসরাই জোনাল অফিসের কর্মকর্তা উৎপল কান্তি দে বাংলানিউজকে বলেন, সাময়িকভাবে উপজেলায় লোডশেডিং সমস্যা হলেও জাতীয় গ্রীডে বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়লে তা কমে যাবে। বর্তমান লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মিরসরাই কৃষি কর্মকর্তা আইয়ুব আলী বলেন, বিদ্যুতের কারণে সেচ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। দ্রুত বিদ্যুতের সমস্যা নিরসন করা না গেলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অসম্ভব হয়ে পড়বে। কৃষকরাও মূলধন হারাবে।
বাংলাদেশ সময় : ০৭৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০১২
মু. রিগান উদ্দিন; সম্পাদনা: আবু হাসান শাহীন, নিউজরুম এডিটর