ঢাকা: পাইকারি (বাল্ক) পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর সোমবার গণশুনানি হবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ট্যারিফ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) হল রুমে এই গণশুনানি হবে।
পাইকারি দাম বৃদ্ধির গণশুনানির পর কাছাকাছি সময়ে খুচরা বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির উপর গণশুনানি করবে বিইআরসি। এরপরে একসঙ্গে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে আদেশ দেওয়া হবে বলে বিইআরসির সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ জানিয়েছেন।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) প্রস্তাবের ভিত্তিতে এই শুনানি করবে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন।
ড. সেলিম মাহমুদ আরও বলেন, “পিডিবিসহ সব বিতরণ কোম্পানির প্রস্তাব, বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের মতামত নেওয়া হবে গণশুনানিতে। সবার মতামতের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে মূল্য। ”
পিডিবি সুত্র জানিয়েছে, বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি ৩ হাজার কোটি টাকার মধ্যে রাখতে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। দাম বৃদ্ধি করা না হলে লোকসান বাড়বে।
পিডিবির প্রস্তাবে বলা হয়েছে- উৎপাদন ও বিক্রির মধ্যে পার্থক্য থাকার কারণে পিডিবির লোকসান বেড়ে যাচেছ। পাইকারি দামের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বর্তমানে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় গড়ে ইউনিটপ্রতি সাড়ে ৬ টাকার মতো হলেও বিক্রি করা হয় গড়ে ৪ টাকা ২ পয়সায়।
গত ৬ জুন বিদ্যুতের পাইকারি দাম ৫০ শতাংশ বৃদ্ধির জন্য পিডিবি প্রস্তাব দেয় । এতে ১ জুলাই থেকে এই দাম কার্যকরের প্রস্তাব করেছে পিডিবি।
পাইকারি দাম বৃদ্ধির সঙ্গে খুচরা ( গ্রাহক) পর্যায়ে দাম বৃদ্ধির সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
গত ২৪ জুন ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) ৫৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) ৫৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব দেয় এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে।
পিডিবি তাদের গ্রাহকদের জন্য ৫৫ থেকে ৫৭ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব জমা দিয়েছে। ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো) ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডও (আরইবি) ৫০ শতাংশের ওপর বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে।
পিডিবির খুচরা দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, নতুন দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব কার্যকর না হলে চলতি অর্থ বছরে ১২ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি প্রয়োজন হবে। আর কার্যকর হলে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার মতো লাগবে।
বর্তমান সরকার ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে শুধু পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) গ্রাহকদের বিদ্যুতের মূল্য ৬ দশমিক ৫৭ ভাগ বাড়ায়। এরপর ২০১০ সালের মার্চে আরইবি ছাড়া অন্যান্য সংস্থার গ্রাহকদের গড়ে ৬ দশমিক ৩২ টাকা দাম বাড়ানো হয়।
এরপর ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৫ শতাংশ খুচরা দাম বাড়ায়। এরপর একই বছরের ডিসেম্বর মাসে পাইকারি দর ১২ দশমিক ৭৯ শতাংশ, চলতি বছরে ফেব্রুয়ারি মাসে ৭ দশমিক ০১ শতাংশ সর্বশেষ ১মার্চ ৬দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়ায়।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১২
সম্পাদনা: জাকারিয়া মন্ডল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর