ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

৩ বছরের মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম না বাড়ানোর দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০২৪
৩ বছরের মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম না বাড়ানোর দাবি

ঢাকা: আগামী ৩ বছরের মধ্যে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম না বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। এছাড়াও আরো ১০টি দাবি জানান ভোক্তার অধিকার নিয়ে কাজ করা এই সংগঠনটির নেতার।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআইউ) সাগর-রুনী হলে ক্যাব আয়োজিত ‘লুণ্ঠন প্রতিরোধে জ্বালানি খাত সংস্কার চাই’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম. শামসুল আলম।

তিনি বলেন, ভোক্তা যেন সঠিক দাম, মাপ ও মানে বিদ্যুৎ, প্রাথমিক জ্বালানি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি সেবা পায় এবং লুণ্ঠনের শিকার না হয়, সেজন্য জ্বালানি সরবরাহের সকল পর্যায়ে স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা, সমতা, যৌক্তিকতা ও জবাবদিহিতা তথা জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিত করতেই এসব দাবি জানানো হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে।  

তাদের দাবিগুলো হলো-

১. অন্যায় ও অযৌক্তিক ব্যয় রোধ করে ঘাটতি সমন্বয় ও পণ্য মূল্যবৃদ্ধি প্রতিরোধ এবং সংকট মোকাবিলা করার লক্ষ্যে ৩ বছরের মধ্যে বিদ্যুৎ ও প্রাথমিক জ্বালানির মূল্যহার বৃদ্ধি করা হবে না— সরকারের কাছ থেকে এমন ঘোষণা করা।

২. সেই লক্ষ্যে বিইআরসির আওতায় ক্যাব প্রস্তাবিত বাংলাদেশ জ্বালানি রূপান্তর নীতি ২০২৪-এর আলোকে জ্বালানি খাত সংস্কার প্রস্তাব প্রণয়নের জন্য একটি ‘জ্বালানি খাত সংস্কার কমিশন’ চাই। সংস্কার প্রস্তাবে বিদ্যুৎ, প্রাথমিক জ্বালানি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি সরবরাহে লুণ্ঠনমূলক ব্যয় রোধ করে ঘাটতি সমন্বয় এবং ভোক্তার জ্বালানি অধিকার সংরক্ষণে জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিত করার জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা চাই।

৩. বিইআরসির চেয়ারম্যান পরিবর্তন হয়েছে। সদস্যরা পদত্যাগ করেছেন। তাদের স্থলে অভিজ্ঞ, নিরপেক্ষ, দক্ষ, সৎ পেশাজীবীদের নিয়োগ সার্চ কমিটির মাধ্যমে চাই। অংশীজনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে সার্চ কমিটি গঠন চাই।

৪. জ্বালানি অধিকার সুরক্ষায় জ্বালানি খাতের আওতাধীন বিভিন্ন কোম্পানির পরিচালনা বোর্ড/সংস্থাগুলোর বিভিন্ন পদে পদস্থ ক্যাডার কর্মকর্তাদের অপসারণ চাই।

৫. একইসঙ্গে পেট্রোবাংলা, বিপিসি, পিডিবি, আরইবি, স্রেডা এবং বিদ্যুৎ ও প্রাথমিক জ্বালানি খাতের বিভিন্ন কোম্পানির শীর্ষ পদগুলোর কর্মকর্তাদের পরিবর্তন চাই। বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি সম্পদ উভয় বিভাগেও অনুরূপ পরিবর্তন চাই। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত পরিচালনায় মন্ত্রণালয়ের কর্তৃত্বের অবসান চাই।

৬. বিইআরসির দ্বারা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে অংশীজনদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ চাই।

৭. বিইআরসিকে সক্ষম ও কার্যকর করার জন্য মন্ত্রণালয়কে কেবল আপস্ট্রিম তথা পলিসি রেগুলেটরের দায়িত্বের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে— এমন দেখতে চাই।

৮. বিইআরসি আইনের সংশোধনী ৩৪ক বাতিল হয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন ২০১০ বাতিল চাই এবং প্রতিযোগিতাবিহীন বিনিয়োগ ও ক্রয়-বিক্রয় আইন দ্বারা নিষিদ্ধ দেখতে চাই।

৯. ২০১২ সালে বিইআরসি প্রস্তাবিত পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের (পেট্রোল, ডিজেল, ফার্নেসওয়েল, কেরোসিন ইত্যাদি) মূল্যহার নির্ধারণ সংক্রান্ত তিনটি প্রবিধানমালা কার্যকর দেখতে চাই।

১০. কস্ট প্লাস নয়, কস্ট বেসিসে লুণ্ঠনমুক্ত মুনাফাবিহীন সরকারি জ্বালানি সেবা চাই।

১১. বিদ্যুৎ, প্রাথমিক জ্বালানি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি সরবরাহের যে কোনো পর্যায়ের দুর্নীতি ও লুণ্ঠনে জড়িত ব্যক্তিদের তালিকা জনসম্মুখে প্রকাশ এবং ‘জ্বালানি অপরাধী’ হিসাবে তাদের বিচার চাই।

সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয়ে বিশ্লেষণ করেন ক্যাবের আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ূন কবির ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মিজানুর রহমান (রাজু)।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০২৪
এসসি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।