ঢাকা: ফের বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসছে আগামী বৃহস্পতিবার। এ নিয়ে সপ্তম দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়াতে যাচ্ছে বর্তমান সরকার।
সর্বশেষ এ দফায় বিদ্যুতের খুচরা ও পাইকারি দাম বাড়ানো হচ্ছে যা সেপ্টেম্বর মাস থেকে কাযর্কর হতে পারে বলে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সূত্র জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কমিশন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির এ ঘোষণা দেওয়া হবে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, বিইআরসির সদস্য প্রকৌশলী ইমদাদুল হক।
তিনি আরো জানান, এবার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণার পাশাপাশি স্লাব (ধাপ) সংখ্যা বাড়ানোর আদেশও থাকছে। এবার মোট ৬টি ধাপ থাকছে, যেখানে বর্তমানে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ৪ ধাপ ও অন্যান্য সংস্থার গ্রাহকদের জন্য ৩ ধাপ কাযর্কর রয়েছে।
সর্বশেষ দফায় দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া নিয়ে গণমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এবার স্লাব বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিইআরসি।
বিইআরসি সূত্র জানায়, এ দফায় পাইকারি পর্যায়ে ১৮ শতাংশ এবং খুচরা পর্যায়ে ১৬ শতাংশ দাম বাড়ানো হতে পারে।
এর আগে গত ২৬ জুলাই বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়ার জন্য সকালে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। তবে, ওইদিনই দুপুরে আবার তা বাতিল করে দেয় বিইআরসি।
গত জুনে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) বিদ্যুতের পাইকারি দাম ৫০ শতাংশ এবং বিতরণকারী সংস্থাগুলো গ্রাহক পর্যায়ে কমবেশি ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করে। এসব প্রস্তাবের ভিত্তিতে ১৬ জুলাই শুধু পাইকারি দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব নিয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
বিইআরসির মূল্যায়ন কমিটি গণশুনানিতে বিদ্যুতের পাইকারি দাম ২২ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করে।
বর্তমানে আবাসিক গ্রাহকদের জন্য ১০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুতের দাম ৩ টাকা ০৫ পয়সা, ১০১ থেকে ৪০০ ইউনিট পর্যন্ত ৪ টাকা ২৯ পয়সা এবং ৪০০-এর বেশি ইউনিট ব্যবহারের ক্ষেত্রে ৭ টাকা ৮৯ পয়সা হারে দাম আদায় করা হচ্ছে।
কেউ ৪০১ ইউনিট ব্যবহার করলে তাকে প্রথম ইউনিট থেকেই প্রতি ইউনিট ৭ টাকা ৮৯ পয়সা দিতে হচ্ছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সরকারের কঠোর সমালোচনা হয়েছে।
এ কারণে, প্রধানমন্ত্রী বিইআরসির সঙ্গে আলোচনায় বসেন এবং বিলকাঠামো পরিবর্তনের নির্দেশ দেন।
বিইআরসির সদস্য সেলিম মাহমুদ বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতেই এবার ধাপ সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বতর্মান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর বিদ্যুতের পাইকারি দাম ৫ দফা এবং খুচরা দাম ৬ দফা বাড়ানো হয়েছে। সব মিলিয়ে খুচরা দাম বেড়েছে প্রায় ৩৬ শতাংশ।
বর্তমান সরকার ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে শুধু পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) গ্রাহকদের বিদ্যুতের মূল্য ৬ দশমিক ৫৭ ভাগ বাড়ায়। এরপর ২০১০ সালের মার্চে আরইবি ছাড়া অন্যান্য সংস্থার গ্রাহকদের গড়ে ৬ দশমিক ৩২ টাকা ভাগ দাম বাড়ানো হয়।
তৃতীয় দফায় ১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৫ ভাগ খুচরা দাম বাড়ে। একই বছরের ডিসেম্বর মাসে চতুর্থ দফায় ১৩ দশমিক ২৪ শতাংশ, পঞ্চম দফায় চলতি বছরে ফেব্রুয়ারি মাসে ৭ দশমিক ০১ শতাংশ এবং সর্বশেষ ষষ্ঠ দফায় ১ মার্চ ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ খুচরা দাম বাড়ানো হয়।
এদিকে, চলতি দফায় পাইকারি দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবে পিডিবি বলেছে, ৫০ শতাংশ হারে দাম বাড়ালেও চলতি অর্থবছরে তাদের ঘাটতি থাকবে ইউনিট প্রতি ৮৪ পয়সা। এতে করে ২০১২-১৩ অর্থবছর শেষে তাদের মোট ঘাটতি দাঁড়াবে ৩৬ হাজার ৮৪২ মিলিয়ন টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ০১৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১২
ইএস/সম্পাদনা: জাহাঙ্গীর আলম ও আবু হাসান শাহীন, নিউজরুম এডিটর