ঢাকা: বিদ্যুতের সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য যখন ঢাক ঢোল পেটানো হচ্ছে, ঠিক তখনই খোদ বৈদ্যুতিক উপদেষ্টার দফতরে বেড়েছে বিদ্যুতের ব্যবহার।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎ উপদেষ্টার দফতরে বিদ্যুতের ব্যবহার বেড়েছে।
অন্যদিকে, পিডিবিও সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসের চেয়ে অক্টোবর মাসে ২৯ হাজার ৫শ’ ৬০ ইউনিট বিদ্যুৎ বেশি ব্যবহার করেছে পিডিবি। যা ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে পরিশোধিত বিদ্যুৎ বিলের চেয়ে ১৮ লাখ ৩১ হাজার ৯শ’ ১৮ টাকা বেশি।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য পিডিবির চেয়ারম্যান অাব্দুল ওয়াহাব খানের মোবাইল ফোনে অনেকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এছাড়া, ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো) ২০১১ সালের অক্টোবরের চেয়ে ২০১২ সালের একই মাসে ২ দশমিক ০৯ শতাংশ বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছে।
ডেসকো ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে ২ লাখ ২৭ হাজার ২শ’ ১৩ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। আর ২০১২ সালের অক্টোবর মাসে বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছে ২ লাখ ৩১ হাজার ৯ শ’ ৭০ ইউনিট। যা বিগত বছরের একই মাসের তুলনায় ৪ হাজার ৭ শ’ ৫৭ ইউনিট বেশি। আর টাকার হিসেবে ধরা হলে ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৫ শ’ ৬১ টাকা বেশি।
সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত না করে বরং বিদ্যুতের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় গত মাসের সমন্বয় সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে আরও কঠোর মনিটরিং করার নির্দেশ দেওয়া হয়ছে সভা থেকে।
বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, সব দফতর ও সংস্থা প্রধানকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বলা হয়।
এদিকে, বিদ্যুতের সবচেয়ে বেশি সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করেছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। আরইবি ২০১১ সালের অক্টোবরের চেয়ে ২০১২ সালের অক্টোবর মাসে ২৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছে।
আরইবি অফিসে ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয় ২১ হাজার ৭শ’ ৫০ ইউনিট। আর ২০১২ সালের একই মাসে তা কমে দাঁড়ায় ১৫ হাজার ৯শ’ ৯০ ইউনিটে। যা ২০১১ সালের চেয়ে ৫ হাজার ৭শ’ ৬০ ইউনিট কম।
এ বিষয়ে আরইবি’র চেয়ারম্যান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মইন উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, “আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। আরইবিতে বেলা ১১টা পর্যন্ত শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বন্ধ রাখা ও দিনের আলো ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। ”
এছাড়া, এনার্জি সাশ্রয়ী বাল্ব ব্যবহার নিশ্চিত ও ৪৮ কিলোওয়াট পিকের সোলার প্যানেলের ব্যবহার নিশ্চিত করায় এ সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি মনে করেন, সাশ্রয়ের ধারা অব্যহত থাকবে। সে সঙ্গে আরও কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
অন্যদিকে, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) ৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি (পিজিসিবি) ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ, ইলেক্ট্রিক জেনারেশন কোম্পানি (ইজিসিবি) ২৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) ১৪ শতাংশ, নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (নওজোপাডিকো) ২৫ দশমিকি ০৯ শতাংশ, রুরাল পাওয়ার কোম্পানি (আরপিসিএল) ২ দশমিক ৩৩ শতাংশ ও আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি ২৬ শতাংশ কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছে।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক বাংলানউজকে বলেন, “সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়েই আরও অনেক বাড়ি আলোকিত করা সম্ভব। সে কারণে সাশ্রয়ের দিকে মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে সাশ্রয়ী ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করার জন্য পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। ”
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৩
ইএস/ সম্পাদনা: জয়নাল আবেদীন, নিউজরুম এডিটর ও অশোকেশ রায়, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর- eic@banglanews24.com