ঢাকা: ৩টি রিগের জনবল দিয়ে চলছে বাপেক্সের ৫টি রিগ। শিগগিরই যোগ হচ্ছে আরও একটি নতুন রিগ।
আর বিষয়টিকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধ্যানে নিয়োজিত একমাত্র রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি বাপেক্সকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে সংশ্লিষ্টরা।
রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান গাজপ্রমের দেশিয় কিছু এজেন্টের অতি উৎসাহের কারণে এমনটি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাক্টশন কোম্পানি (বাপেক্স)সুত্র জানায়, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন একমাত্র তেল-গ্যাস অনুসন্ধ্যান কোম্পানিটি ১৯৮৮ সালে গঠন করা হয়। এর জনবল কাঠামোতে ৩টি রিগের জনবল যুক্ত করা হয়।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে আগের তিনটি রিগের সঙ্গে আরও ২টি নতুন রিগ যোগ করে। এতে রিগের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫টি। এরমধ্যে রয়েছে ৩টি ড্রিলিং ও ২টি ওয়ার্ওভার রিগ। শিগগিরই আসছে আরও একটি রিগ। যা আগামী ২ মাসের মধ্যেই বাপেক্সের বহরে যোগ হতে যাচ্ছে।
কিন্তু রিগের বিপরীতে নতুন করে জনবল বাড়ায়নি বাপেক্সে। সে কারণে ৩টি রিগের জনবল দিয়েই চলছে ৫টি রিগের কার্যক্রম। নতুন একটি রিগ আসলেও একই জনবল দিয়েই চালাতে হবে।
বাপেক্সের খনন বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে জানান, ৩টি রিগের জনবল দিয়ে ৫টি রিগ পরিচালনা করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে বাপেক্স। অনেক সময় ব্যহত হচ্ছে কাজের অগ্রগতি।
এরই মধ্যে ড্রিলিং সুপারভাইজার জহুরুল ইসলাম ও জামিউল হাসানকে ২ বছরের লিয়েন দেওয়ার জন্য সুপারিশসহ অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এই দুইজন যদি গাজপ্রমে চলে যায় তাহলে বাপেক্সের কার্যক্রম ব্যহত হবে। জনবল অভাবেই পড়ে থাকবে রিগ।
কিন্তু বাপেক্স ও পেট্রোবাংলা কর্মকর্তারা বিষয়টি বুঝতে চাচ্ছেন না। অদৃশ্য কারণে তারা গাজপ্রমের পক্ষে টানছেন। বাপেক্স নয়, গাজপ্রমের স্বার্থই তাদের কাছে সবচেয়ে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ জন্য সবকিছু জেনেও তারা লিয়েনে সুপারিশ দিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা দাবি করেছেন, গ্যাজপ্রমকে কাজ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর পর থেকেই বাপেক্সের ও পেট্রোবাংলার কয়েকজন কর্মকর্তা নগ্নভাবে গাজপ্রমের সার্থ রক্ষা করে চলছে। গাজপ্রমের ফাইল প্রসেস করার জন্য বাপেক্সের নিজেদের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে রাখার নজির রয়েছে।
এ বিষয়ে লিয়েন যাওয়ার জন্য আবেদন করা ড্রিলিং সুপারিনটেনডেন্ট জহুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, এতে বাপেক্সের লাভই হবে। তারা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কাজ করে নিজেরা সমৃদ্ধ হতে পারবেন। যা পরবর্তীতে বাপেক্সে কাজে লাগাতে পারবেন।
জহুরুল ইসলাম দাবি করেনে এতে বিনা খরচে বাপেক্সের কর্মকর্তার ট্রেনিং হচ্ছে। এই সুযোগ গ্রহণ করা উচিত।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ড. হোসেন মনসুর বাপেক্সের জনবল সংকট ও ৩টি রিগের জনবল দিয়ে ৫টি রিগ পরিচালনার কথাও স্বীকার করেন।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আরও জানান, দেশের অভ্যন্তরে এরা কাজ করবে তাই এতে দেশের কাজেই আসবে। এতে বাপেক্সের কাজ ব্যহত হবে না।
বাপেক্সে দক্ষ লোক ধরে রাখা যাচ্ছে না দাবি করে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, তাদের জন্য সম্মানজনক বেতন নেই, তাহলে তারা থাকবেন কেন। প্রতিনিয়ত বাপেক্স ছেড়ে বিদেশ পাড়ি জমাচ্ছে অনেকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৩
ইএস./সম্পাদনা: নূরনবী সিদ্দিক সুইন, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর