ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে স্থিতাবস্থা চেয়ে রিট খারিজ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০১৩
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে স্থিতাবস্থা চেয়ে রিট খারিজ

ঢাকা: বাগেরহাটের রামপালে সুন্দরবন এলাকায় কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রোববার বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটটি সরাসরি খারিজ করে দেন।

আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ।

এর আগে গত ২ অক্টোবর বুধবার বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমদের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি চলাকালে বিব্রতবোধ করেন কনিষ্ঠ বিচারপতি জাফর আহমদ।

চার আবেদনকারীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ গত মঙ্গল ও বুধবার ওই বেঞ্চে শুনানিতে অংশ নেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

বিচারপতি বিব্রতবোধ করায় রোববার এম মোয়াজ্জাম হোসেন ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের বেঞ্চে রিট আবেদনটি তোলা হয়।

রিটের যৌক্তিকতা না থাকায় আদালত তা সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

তবে রিটকারীদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বাংলানিউজকে বলেন, এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি দায়ের করেন অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী, মো. এখলাস উদ্দিন ভূঁইয়া, মাহবুবুল ইসলাম ও সৈয়দা শাহিন আরা লাইলী।

আবেদনে রামপালের ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশের পরিবেশের প্রভাব মূল্যায়নে দেশি-বিদেশি পরিবেশবিদ এবং জীব-বৈচিত্র্য ও ইকো-সিস্টেম বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনে কেন বিবাদীদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।

রিটে বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছ থেকে প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত ওই বিদ্যুৎ প্রকল্পের বাস্তবায়ন কার্যক্রমে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে বিবাদীদের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়।

এ কমিটির সুপারিশ অনুসারে, পরিবেশবান্ধব যেকোনো এলাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে কেন বিবাদীদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হবে না, এ মর্মেও রুল জারির আবেদন জানানো হয়।

রিট আবেদনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পরিকল্পনা সচিব, পরিবেশ সচিব, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সচিব, নৌপরিবহন সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালককে বিবাদী করা হয়।

তবে রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে এ পর্যন্ত অন্তত তিনটি রিট হয়েছে। এরপর পেরিয়ে গেছে আড়াই বছর। এখনও অন্য রিটগুলোর নিষ্পত্তি হয়নি।

২০১০ সালের ৩০ আগস্ট বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে রামপালে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুকেন্দ্র স্থাপনে সমঝোতা-চুক্তি সই হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং শনিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রামপালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন।

অন্যদিকে, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প আগামী ১১ অক্টোবরের মধ্যে বাতিল না করা হলে ১২ অক্টোবর নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে লংমার্চের সমাপনী সমাবেশে ঘোষণা দিয়েছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে সুন্দরবন ঘোষণাপত্র পাঠের সময় এ ঘোষণা দেন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মাদ।

ঘোষণাপত্রে তিনি বলেন, রামপাল প্রকল্প সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে হলেও সরকারের প্রেসনোটে বলা হয়েছে, ইউনেস্কো ন্যাশনাল হেরিটেজ সাইট থেকে রামপাল প্রকল্পের দূরত্ব ৭২ কিলোমিটার এবং তা নিরাপদ দূরত্বে রয়েছে। বাস্তবে ইউনেস্কো ন্যাশনাল হেরিটেজ বলে আলাদা কিছুই নেই। যা রয়েছে তা হলো, ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট, যা গোটা সুন্দরবনকেই বোঝায়। সুতরাং ১৪ কিলোমিটার দূরে হলেও ৭২ কিলোমিটার দূরে বলা জনগণের সঙ্গে জালিয়াতি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৩/আপডেট ১৮০০ ঘণ্টা
জেএ/এসএটি/এনএস/এএসআর/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।