ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

দুই বছর আগে টাকা দিয়েও বিদ্যুৎ পাননি তারা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৪
দুই বছর আগে টাকা দিয়েও বিদ্যুৎ পাননি তারা ফাইল ফটো

বগুড়া: চাহিদামতো টাকা দেওয়ার পর পেরিয়ে গেছে দুই বছর, তবুও বিদ্যুৎ পাননি বগুড়ার সারিয়াকান্দী উপজেলার রৌহদহ গ্রামের ৭০টি বাড়ির বাসিন্দা। বরং বিদ্যুতের জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নাম ভাঙ্গিয়ে ওই ৭০টি বাড়ি থেকে প্রায় ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এক ইলেকট্রিক মিস্ত্রি।



ভূক্তভোগী গ্রামবাসীর দাবি, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মনিরুজ্জমান মোনেমকে সঙ্গে নিয়ে আলমগীর নামের ওই ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রি এসব টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আলমগীর নিজেকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মচারী হিসাবে দাবি করলেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তিনি আসলে একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি।

তবে আলমগীর ‘সমিতি-ঘনিষ্ঠ’ অভিযোগ করে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন, আলমগীরের এসব কর্মকাণ্ড পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিরও অজানা নয়। যদিও বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে নারাজ স্থানীয় পল্লী বিদ্যু‍ৎ কর্তৃপক্ষ।  

মঙ্গলবার সরজমিনে রৌহদহ গ্রামে গেলে ভূক্তভোগীরা এসব অভিযোগ তুলে ধরেন বাংলানিউজের কাছে।

রৌহদহ গ্রামের মাজেম, মোজাম, বাবু, পিন্টুসহ কয়েকজন বাংলানিউজকে জানান, বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথা বলে প্রায় দুই বছর আগে তাদের কাছ থেকে ইউপি সদস্য মোনেম ও আলমগীর বাড়িপ্রতি ৪ হাজার ২০০ টাকা করে নেয়। অথচ এখন আলমগীর বলছে, আমি কী করবো, অফিস বিদ্যুৎ না দিলে আমি কী করবো?

গ্রামের বাসিন্দা নুরুন্নবীর স্ত্রী হোসনে আরা জানান, রাস্তায় রাস্তায় মাটি কেটে অনেক কষ্টে আলমগীরকে টাকা দিয়েছি বিদ্যু‍ৎ সংযোগের জন্য। এখন আলমগীর বলে, আপনারা অফিসে যোগাযোগ করেন, আমি কী করবো। টাকা ফেরত চাইলে বলে, সব টাকাতো আমি একাই নেইনি, আমি কীভাবে টাকা ফেরত দেবো?   
  
একই কথা বলেন সিরাজ, মনু, করিম, রঞ্জু ও লিলি বেগম। তাদের অভিযোগ, এতগুলো কষ্টের টাকা নিয়ে গেলো, এর কি কোনো বিচার হবে না?

এ ব্যাপারে কামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মনিরুজ্জামান মোনেম টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, তিনি টাকাগুলো আলমগীরকে দিয়েছেন। এখন আজ হবে, কাল হবে বলে সময় পার করলে আমার কী করার আছে?

ইলেকট্রিক মিস্ত্রি আলমগীর এ ব্যাপারে বাংলানিউজকে বলেন, ৭০টি বাড়ি নয়, যতদূর মনে পড়ে ৩০-৩৫ বাড়ির লোকজন টাকা জমা দিয়েছেন। এসব ঘরে অগ্রিম কিছু ওয়্যারিংয়ের কাজ করা হয়েছে।

দুই বছর আগে টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, তার কিছুই করার নেই। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সঙ্গে কথা বলার আহ্বান জানান।

বগুড়া পল্লী বিদ্যু‍ৎ সমিতির সারিয়াকান্দী এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বিদ্যু‍ৎ প্রত্যাশি অনেকেই অফিসের সঙ্গে কথা না বলে আলমগীরের সঙ্গে লেনদেন করেছেন। আলমগীর পল্লী বিদ্যুতের কেউ নয়, বিদ্যুতের জন্য কোনো টাকা আদায় করার ক্ষমতা তাকে দেওয়া হয়নি।

তবে যে এলাকার মানুষদের এই অভিযোগ তারা ২০১৫ সালের মধ্যে ১৮ লাখ গ্রাহক প্রকল্পের আওতায় নতুন বিদ্যু‍ৎ সংযোগ পাবেন বলে নিশ্চিত করেন পল্লী বিদ্যুতের এই কর্মকর্তা।

বগুড়া পল্লী বিদ্যু‍ৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার ডি. এ. জে. শামছুদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, বিষয়টি নিয়ে রৌহদহ গ্রামবাসীর সঙ্গে তার কথা হয়েছে।

বিষয়টি তদন্ত করে দেখে তিনি এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার।             

বাংলাদেশ সময়: ২২১১ ঘণ্টা, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।