ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়াতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০১৫
গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়াতে বললেন প্রধানমন্ত্রী ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: গ্রামে বিদ্যুৎ সম্প্রসারণের পাশাপাশি সরবরাহ বাড়াতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিরার (০৯ এপ্রিল) সকালে সচিবালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।



প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়াতে হবে। গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ালে সেখানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। এতে গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী হলে দেশ দ্রুত উন্নয়নের পথে এগোবে, দেশের অর্থনীতি হবে শক্তিশালী।

প্রধানমন্ত্রী সবাইকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিদ্যুৎ বিল কমাতে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হোন।

একই সঙ্গে তিনি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও ব্যবহার ওপরও জোর দেন।

গুদাম ঘরের মতো ভবন নির্মাণ না করে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে ভবনে বায়ু চলাচলের জন্য ঘুলঘুলি ও ভেন্টিলেশন রাখার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।

বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি খরচ কমানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, পুরোনো বিদ্যুৎকেন্দ্রের যেগুলোতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে অধিক জ্বালানি খরচ হয়, সেগুলো আস্তে আস্তে বাদ দিয়ে নতুন প্রযুক্তিসম্পন্ন কম জ্বালানি খরচে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব দেন। একই সঙ্গে তিনি সোলার প্যানেলে বসানোর ক্ষেত্রে যাতে জমির অপচয় না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার পরামর্শ দিয়ে বলেন, সেচের নালা, খালের ওপর আমরা সোলার প্যানেল বসাতে পারি। এতে একদিকে জমি সাশ্রয় হবে, অন্যদিকে পানি বাষ্প হয়ে উড়ে যাওয়া রোধ হবে।

স্কুল, কলেজসহ দিবা-রাত্রির প্রতিষ্ঠানগুলোতে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের ওপর গুরুত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এতে প্রথম দিকে কিছু টাকা খরচ হলেও সার্বিকভাবে এটা অনেক লাভজনক।

ইকোনোমিক জোনগুলোতে কলকারখানার পাশাপাশি একটি করে পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি, গ্রিড সঞ্চালন, গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থা, জলাধার রাখাসহ এখন থেকে সব কিছু পরিকল্পিতভাবে করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

সবার জন্য বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের প্রত্যেক ঘরে আলো জ্বালতে হবে। এখন দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। আগামীতে প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সরকার কাজ করছে।

বিদেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্যদেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির দৃষ্টান্ত আমরা স্থাপন করেছি। আগামীতে আমরা ভারত থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনবো। এছাড়া আগরতলা থেকে ১০০ মেগাওয়াটসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে বিদ্যুৎ আনা হবে।

নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করতে সরকারের পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন তিনি।

বিগত সরকারের বিদ্যুৎ জ্বালানির দুরাবস্থার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসেই বিদ্যুৎ উৎপাদনে গুরুত্ব দিয়েছিলাম। ২০০১ সাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করি। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ায়নি। বরং ২০০৯ সালে আমরা যখন আবার সরকার গঠন করি তখন বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে ৩ হাজার ২০০ মেগাওয়াটে নেমে আসে।

বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের সফলতার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে আবার কাজ শুরু করি। মাত্র ৬ বছরে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাপক সফলতা লাভ করি। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা উন্নীত করি ১৩ হাজার ৬০২ মেগাওয়াটে।

জানুয়ারি থেকে বিএনপির ৯২ দিনের টানা অবরোধ ও হরতালে চলা সহিংসতার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনের নামে বিদ্যুৎকেন্দ্র পুড়িয়ে দেওয়া, জ্বালাও-পোড়াও করা, মানুষ পুড়িয়ে মারা- এসব ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড দেখলে খুবই খারাপ লাগে।

সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে মানুষ আর্থ-সামাজিকভাবে ব্যাপক উন্নতি করেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আর মানুষের মধ্যে ভাতের জন্য হাহাকার নেই। মানুষ এখন তাদের ছেলে মেয়েদের পড়াশুনা ও উন্নত জীবন-যাপনের জন্য বিদ্যুৎ চায়। এসব দেখে একটা আত্মতৃপ্তি পাই, আমরা মানুষের জন্য কিছু করতে পেরেছি।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৫/আপডেট ১৪৩৫ ঘণ্টা
এমইউএম/আরএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।