ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

এবার পেকুয়ায় ১২শ’ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৫
এবার পেকুয়ায় ১২শ’ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ছবি: প্রতীকী

ঢাকা: কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়িতে কয়লাভিত্তিক দু’টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্ট দু’টি থেকে ৬শ’ মেগাওয়াট করে মোট ১২শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।

এবার কক্সবাজারেরই পেকুয়া উপজেলায় আরও দু’টি নতুন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার। ৬শ’ মেগাওয়াট করে এ দুই কেন্দ্র থেকেও মোট ১২শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে।

বিদ্যুৎ বিভাগের ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড অব বাংলাদেশ (ইজিসিবি) এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে। ১২শ’ মেয়াওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন, পরিবেশগত প্রভাব নিরুপণ ও অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে ইজিসিবি।

ইজিসিবি সূত্র জানায়, পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগে ‘ল্যান্ড ইক্যুইজেশন, রিসেটেলমেন্ট অ্যান্ড ফিজিবিলিটি স্টাডি ফর ইমপ্লিমেন্টশন অব ২.৬০০ মেগাওয়াট কোল বেজড পাওয়ার প্ল্যান্ট’ প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
 
এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ৫১৬ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৭ কোটি টাকা সংস্থান করবে পিজিসিবি। প্রাথমিকভাবে এ প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে মূল প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।
 
বাংলাদেশের ইতিহাসে বৃহত্তম ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়িতে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। এ প্রকল্প থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে পেকুয়ায় আরও একটি ইতিহাস রচনা হতে যাচ্ছে।
 
নতুন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিষয়টি নিশ্চিত করে বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বাংলানিউজকে বলেন, ‘মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ১২-১৩ কিলোমিটার দূরে পেকুয়ায় ৬০০ মেগাওয়াট করে দু’টি ইউনিটে ১২শ’ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করা হবে। এ উদ্দেশ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন, পরিবেশগত প্রভাব নিরুপণ এবং ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পন্ন করার জন্য প্রকল্প নিতে যাচ্ছি’।
 
মূল প্রকল্পের ব্যয় কত হতে পারে?- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ফিজিবিলিটি স্টাডি করার পরই সবকিছু বলা যাবে। তবে পেকুয়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হলে দেশে বিদ্যুতের কোনো অভাব থাকবে না’।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইজিসিবি লিমিটেডের মাধ্যমে কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলায় ১২শ’ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল টেকনোলজির বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে লক্ষ্যে ১ হাজার ৫৬০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে।
 
বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৩ হাজার ৭শ’ মেগাওয়াটে এসে দাঁড়িয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে ২৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে।
 
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল  আলম বলেন, ‘৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এ পরিকল্পনায় সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। একই সময়ে ২৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ লক্ষ্য পূরণ করতে ভূমিকা রাখবে পেকুয়ার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র’।
 
‘এরপর থেকে আমরা বিদ্যুতের বড় বড় প্রকল্প গ্রহণ করবো। যেন কম টাকায় বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় এবং ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া যায়’।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৫
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।