ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে লাভ নেই

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৭
রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে লাভ নেই পাবনা সদর আসনের এমপি গোলাম ফারুক প্রিন্সরূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিদর্শন করেন

পাবনা: বাংলাদেশের মানুষ এখন অনেক সচেতন। তাদের আর জুজুর ভয় দেখিয়ে কোনো কিছুতে আটকে রাখা যাবে না। অপপ্রচার চালিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ ব্যাহত করার চেষ্টা হলে জনগণই তাদের প্রতিরোধ করবে।

বুধবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে পাবনা সদর আসনের এমপি গোলাম ফারুক প্রিন্স সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

এমপি প্রিন্স বলেন, পাবনাবাসী সৌভাগ্যবান, কারণ এখানে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রকল্প রূপপুর পারমানবিক প্রকল্পের কাজ চলছে।

চলমান এ প্রকল্প সম্পন্ন হলে শুধু পাবনা নয়, সারাদেশের অর্থনীতির আমূল পরিবর্তন ঘটবে। দেশের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ হওয়ার পাশাপাশি শিল্প বিকাশের মাধ্যমে সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান।
রূপপুর প্রকল্প এলাকার জনগণের উদ্দেশে এমপি বলেন, এ দেশে যখনই নতুন কোনো প্রকল্প হয়েছে, ষড়যন্ত্রকারীরা বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। বলা হয়েছে আওয়ামী লীগ দেশ বিক্রি করে দিচ্ছে, বিদেশিদের স্বার্থসিদ্ধি করছে। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনা এসব অপপ্রচারকে তুচ্ছ জ্ঞান করে এগিয়ে গেছেন, তাতে বাংলাদেশ এখন বিশ্ববাসীর চোখে বিস্ময় ও উন্নয়নের রোল মডেল।

রূপপুর পারমানবিক প্রকল্প সম্পন্ন হলে প্রধানমন্ত্রীর রুপকল্প ২০২১ অনেকটাই বাস্তবায়িত হবে। তাই এ প্রকল্প বন্ধ করতে দেশি বিদেশি চক্রান্তকারীরা নানা অপপ্রচার করে সহজ সরল মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এ প্রকল্প পাবনাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় বয়ে আনবে, বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম হবে এ ধরনের নানা মিথ্যা রটনা করে বেড়াচ্ছে।

তাদের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে এমপি প্রিন্স বলেন, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে সরকার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। এখানে কোনো ধরনের বিপর্যয়ের বিন্দু মাত্র সম্ভাবনা নেই। মিথ্যা রটনা আর গুজব ছড়িয়ে এদেশে যে আর রাজনীতি করা যাবে না, বিএনপি-জামায়াতের বর্তমান অবস্থাই তার প্রমাণ।

এর আগে এমপি প্রিন্স রুপপুর পারমানবিক প্রকল্পের চুল্লি নির্মাণ (মূল কাজ) ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের আবাসিক ভবনের নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন।
আবাসিক এলাকায় ৩৯ একর জমির উপর ২ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০ তলা উঁচু ১২টি এবং ১৬ তলা উঁচু ৭টি মোট ১৯টি ভবন নির্মিত হচ্ছে। প্রায় ২ হাজার শ্রমিক দিনরাত পরিশ্রম করে ভবনগুলো নির্মাণ করছেন। ৫ হাজারেরও বেশি পরিবার এখানে বসবাস করতে পারবে। আবাসিক ভবনের কাজ শেষ হবে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে।

এ সময় প্রকল্পে দ্বায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানান, ঋণচুক্তি অনুযায়ী আগামী আগস্টে প্রকল্পের মূল পর্বের কাজ শুরু হলে ২০২৩ সাল নাগাদ প্রথম ইউনিট থেকে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।

উল্লেখ্য, রাশিয়ার সরাসরি তত্ত্বাবধানে পাবনার রূপপুরে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১২০০ করে মোট ২৪০০ মেগাওয়াটের ২টি ইউনিট স্থাপন করা হবে। এককভাবে বাংলাদেশে এটিই সর্বোচ্চ ব্যয়বহুল প্রকল্প। ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ১ লাখ ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। ৯০ ভাগ অর্থ ঋণ হিসেবে রাশিয়া দেবে। বাকিটা বাংলাদেশ সরকারকে বহন করতে হবে। পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের খরচ অনেক বেশি। তবে বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কম বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, ১২ এপ্রিল, ২০১৭
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।