ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

ভুটানের বিদ্যুৎ-মহাপ্রকল্পের অংশ হচ্ছে বাংলাদেশ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৭
ভুটানের বিদ্যুৎ-মহাপ্রকল্পের অংশ হচ্ছে বাংলাদেশ ভুটানের একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ছবি

২০২০ সালের মধ্যে ভারতের সঙ্গে মিলে ১০ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষে এক উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ভুটান। ১০/২০ প্রোগ্রাম নামের এ পরিকল্পনার অংশ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আর সে সুবাদে কম করে হলেও ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাবে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এতথ্য জানা গেছে।

কর্মকর্তারা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভুটান সফরকালে (১৮ থেকে ২০ এপ্রিল) এ বিষয়টি প্রধান বিষয় ছিল। ভুটানের অনেক নদী আছে যেগুলো বরফগলা ও হিমবাহ গলা পানিতে প্রবাহিত।

এসব অতি খরস্রোতা নদীতে বাঁধ দিয়ে ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনও সম্ভব।

অথচ এ-মুহূর্তে উৎপাদন করা হচ্ছে মাত্র ১,৪৮০ মেগাওয়াট। যার পুরোটাই ভারত প্ল্যান্ট স্থাপন করে উৎপাদন করে দেয়। আবার এই বিদ্যুতের ৭৫ শতাংশই কিনে নেয় ভারত। এই বিদ্যুৎ বিক্রি করে ভুটান তার ৪০ শতাংশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে যা তাদের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২৫ শতাংশ।

তিনি বলেন, ভুটানে নামমাত্র খরচে যে বিপুল পরিমাণ জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে, তার মাত্র ৬ শতাংশ জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। এই বিপুল সম্ভাবনার সুবর্ণ সুযোগটাকেই এখন কাজে লাগাবার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ।  

২০০৬ সালে ৫ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যাপারে ভারত ও ভুটান একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। “concerning cooperation in the field of hydroelectric power”—এর আওতায়ই এই চুক্তি।

ঠিক এ চুক্তির আওতায় ২০০৯ সালে আরও একটি প্রটোকল-চুক্তি স্বাক্ষর করে দুটি দেশ।

উদ্দেশ্য ছিল, ভুটানে ভারতের অর্থায়নে ২০২০ সালের মধ্যে ১০ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা। এখন তাতে বাংলাদেশও যোগ দিতে যাচ্ছে। আর এ সংক্রান্ত প্রকল্পের অংশ হতে বাংলাদেশ ১০০ কোটি (এক বিলিয়ন) ডলার অর্থ বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে। এই প্রকল্প থেকে কম করেও এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাবার আশা করছে বাংলাদেশ।

এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ভারত দশটি মেগা জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে। এরই মধ্যে এরকম তিনটির কাজ শুরু হয়ে গেছে।

২০১৪ সালের জুনে ভুটান সফরে গিয়ে ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি  খোলংছুতে (Kholongchhu) ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। অন্য নয়টি প্রকল্পের মধ্যে ১,২০০ মেগাওয়াটের পুনাতসাংছু-১ (Punatsangchu-I), ১০২০ মেগাওয়াটের পুনাতসাংছু-২ (Punatsangchu-II), ৭২০ মেগাওয়াটের মাংদেছু (Mangdechhu) প্রকল্পের কাজ পুরোদমে চলছে।

আর ৫৪০ মেগাওয়াটের আমোছু জলাধার প্রকেল্প (Amochhu Reservoir project), ৫৭০ মেগাওয়াটের ওয়াংচু নদী প্রকল্প (Wangchu Run-of-the-River project), ১৮০ মেগাওয়াটের বাবুনাখা জলাধার প্রকল্প (Bunakha Reservoir project), ২৬৪০ মেগাওয়াটের কুরি গংরি জলাধার প্রকল্প (Kuri Gongri Reservoir project) , ৭৭০ মেগাওয়াটের চামখারছু-১ জলবিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প (Chamkharchhu-I HEP --Hydro-Electric Power project) এবং ২৫৬০ মেগাওয়াটের  সাংকোশ জলাধার প্রকল্পের (Sankosh Reservoir project) এর কাজ বিভিন্ন স্তরে আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৭
কেজেড /জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।