ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

কয়লার অভাবে বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৮
কয়লার অভাবে বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র

পার্বতীপুর (দিনাজপুর): আটদিন চালু থাকার পর কয়লার অভাবে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২ নম্বর ইউনিটটি বন্ধ হয়ে গেছে। মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়।

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলে লো ভোল্টেজ সমস্যা এড়াতে গত ২০ আগস্ট বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের মধ্যে ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার ২ নম্বর ইউনিটটি চালু করা হয়েছিল।

সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয়ার্ধে বড়পুকুরিয়া খনিতে কয়লা উত্তোলন শুরু হলে কয়লা প্রাপ্তী সাপেক্ষে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুনরায় চালু হবে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানায়।

এরআগে ২২ জুলাই রাত ১০টা ২০ মিনিটে জ্বালানি সংকটে পড়ে দেশের একমাত্র কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি ও ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার দু’টি ইউনিট রয়েছে। কেন্দ্রটি পূর্ণ উৎপাদনে থাকলে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ হাজার ২শ মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন হয়।

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী (চিফ ইঞ্জিনিয়ার) আব্দুল হাকিম সরকার বাংলানিউজকে জানান, বড়পুকুরিয়া খনির ফেইজ উন্নয়নকালীন প্রাপ্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মেট্রিক টন কয়লার সরবরাহ পাওয়ায় ২ নম্বর ইউনিটটি সাময়িকভাবে চালু করা হয়েছিল। কয়লা না থাকায় মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

কয়লা প্রাপ্তি সাপেক্ষে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে উৎপাদন শুরু হতে পারে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি আরও জানান, জরুরি প্রয়োজন মেটাতে এক লাখ মেট্রিক টন কয়লা আমদানি করা হচ্ছে। বড়পুকুরিয়া খনিতে উৎপাদনে যেকোনো সমস্যা মোকাবেলায় আপদকালীন মজুত হিসেবে কয়লা বিদেশ থেকে আনা হচ্ছে।

এদিকে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, খনির ১৩১৪ নম্বর ফেইজে উৎপাদন যন্ত্রপাতি স্থাপন কাজ চলছে। যন্ত্রপাতি স্থাপন কাজ শেষ করতে সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি লেগে যাবে। এরপর কয়লা উত্তোলন শুরু হবে।

কয়লার অভাবে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হওয়ার দারপ্রান্তে উপনিত হলে খনির ইয়ার্ড থেকে প্রায় ২৩০ কোটি টাকার এক লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা উধাও/পদ্ধতিগত লোকসান (সিস্টেম লস) হওয়ার ঘটনাটি ১৯ জুলাই ধরা পড়ে।

এ ঘটনায় বিসিএমসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমদক, মহাব্যবস্থাপক (জিএম-মাইন অপারেশন) নুরুজ্জামান চৌধুরী ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম-স্টোর) খালেদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। খনির কোম্পানি সচিব ও জিএম (প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানিয়াকে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড সিরাজগঞ্জে বদলি করা হয়। খনির এ তিন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাসহ ১৯ কর্মকর্তার নামে দুর্নীতি দমন আইনে ২৪ জুলাই পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়।

মামলাটি তদন্ত করছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ঢাকার উপ-পরিচালক শামসুল আলম। খনির সাবেক দুই এমডি মো. কামরুজ্জামান ও আমিনুজ্জামান এবং মামলায় অভিযুক্ত ১৯ কর্মকর্তাসহ ২১ কর্মকর্তার দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দুদক।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (ডিজি-প্রশাসন) খলিলুর রহমানের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটিসহ মোট তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৮
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।