ঢাকা: ঢাকা সিটির ফ্লাট বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার আগে সোলার হোম স্থাপনের শর্ত শিথিল করার দাবি জানিয়েছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। একইসঙ্গে সংগঠনটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ব্যবহার নিষিদ্ধকরণের গেজেট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে রিহ্যাবের একটি প্রতিনিধি দল বিদ্যুৎ ভবনের পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মাহাবুব-ই-কায়নাতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ দাবি জানান।
আলোচনা শেষে রিহ্যাব সাধারণ সম্পাদক মুরাদ ইকবাল চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্তমানে নির্মাণ শেষ হয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের অপেক্ষায় রয়েছে প্রায় ১৬ হাজার ফ্ল্যাট। এছাড়া অল্পদিনের মধ্যেই আরও ২২ হাজার ফ্ল্যাটের নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
এসব ফ্ল্যাটের নকশা অনেক আগেই তৈরি করা হয়েছে। এ কারণে এসব ফ্ল্যাটে সরকার ঘোষিত সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন সম্ভব নয়। এ কারণে আমরা সরকারের সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছি।
আমরা এও বলেছি, এখন যেসব ফ্ল্যাটের নির্মাণ কাজ শুরু করা হচ্ছে, সেসব ফ্ল্যাটে সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব আমরা মেনে নিয়েছি। ’
প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুর রহিম খান, রিহ্যাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য আনিসুজ্জামান রানা।
পাওয়ার সেলের হলরুমে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মাহাবুব-ই-কায়নাত।
এসময় উপস্থিত ছিলেন পাওয়ার সেলের পরিচালক (বাণিজ্যিক) আমজাদ হোসেন ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ।
মহাপরিচালক মাহাবুব-ই-কায়নাত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা তাদের প্রস্তাবগুলো শুনেছি। এগুলো আমরা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে দেব। আমরা চেষ্টা করছি তাদের কতটুকু কষ্ট লাঘব করা যায়। ’
তিনি আরও বলেন, সরকার বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলা ও নবায়ন যোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াতে আগে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার আগে সোলার হোমস সিসটেম স্থাপন বাধ্যতামুলক করেছে। যে কারণে বর্তমানে ফ্লাট বাসায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার সময় ৮ কিলোওয়াট পিক লোড অনুমোদন দেওয়া হলেও তারা ২ কিলোওয়াটের বেশি ব্যবহার করতে পারবে না।
সংযোগ দেওয়ার আগে এসি ব্যবহবার না করার জন্য নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকার নেওয়া হবে। অঙ্গীকার ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে কি ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে এ প্রশ্নের জবাবে বলেন, এই অঙ্গীকার অনেকটা তার সততার ওপর নির্ভর করবে।
কি ধরনের শাস্তির বিধান থাকছে তা এখনও চুড়ান্ত করা হয়নি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
‘২০১২ সালের শেষের দিকে বিদ্যুতের চাহিদা এবং উৎপাদনের মধ্যে ব্যবধান কমে আসলে এই নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি আরও বলেন, সোলার হোম সিসটেম স্থাপনে পাওয়ার মজুদ করণ ব্যাটারির ব্যবহার বাধ্যতামুলক থাকলেও বিহ্যাবের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাটারির ব্যবহার শিথিল করা হয়েছে। এখন শুধু সোলার প্যানেল স্থাপন করে দিলের বেলা ফ্যান, টিভি ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
রিহ্যাব সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, শুধু ঢাকা শহরে ১৬ হাজার ফ্লাট বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে না পারায় হস্তান্তর করা যাচ্ছে না। যে কারণে আবাসন ব্যাবসায় চরম সংকট নেমে এসেছে।
একইসঙ্গে বাসায় ক্রেতারা উঠতে না পারায় ১হাজার ৩২৪ কোটি টাকার রাজস্ব থেকেও সরকার বঞ্চিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, রিহ্যাব মনে করে শহরে যে সব বাসার আগেই প্লান করা হয়েছে এ সব বাসায় সোলার হোম সিসটেম স্থাপন বাধ্যতামুলক করা স¤পূর্ণ অযৌক্তিক। শহরে কোথাও হাটার স্থান নেই সে কারণে ভবনগুলোর ছাদে বাসিন্দারা হাটা চলার ব্যবস্থা করেন। এ ছাড়া অনেক স্থানে সবুজায়ন করা হয়। সোলার হোমস সিসটেম স্থাপন করতে হলে সুবজায়ন বন্ধ হয়ে যাবে।
অব গ্রিড অঞ্চলে সোলার হোম সিসটেম স্থাপনের সুপারিশ করে তিনি বলেন, প্রয়োজন হলে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া যেতে পারে। আর এতে রিহ্যাব সহযোগিতা করতেও প্রস্তুত।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১১