বুয়েট শিক্ষার্থীদের তুমুল আন্দোলনের মুখে সর্বোচ্চ গুরুত্ব পায় আবরার হত্যা মামলার তদন্ত। চকবাজার থানায় মামলা হলেও তদন্তের দায়িত্ব পায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মী কয়েক ঘণ্টা ধরে বেধড়ক পেটায় আবরার ফাহাদকে। এর ফলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। হলের সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের মুখ। পরদিন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় একটি মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির লালবাগ জোনাল টিমের পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান ১৩ নভেম্বর ২৫ জনের নামে এই মামলায় অভিযোগপত্র জমা দেন। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জন এবং এজাহার বহির্ভুত ৬ জন।
তদন্ত চলাকালে মামলায় অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে ২১ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তারা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিওন, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ, উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা, শাখা ছাত্রলীগ সদস্য মুনতাসির আল জেমি, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির ও ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত এবং এস এম মাহমুদ সেতু। এর মধ্যে ছাত্রলীগ হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্তদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে।
গ্রেফতারদের মধ্যে ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এস এম মাহমুদ সেতু ছাড়া বাকি সবাই এজাহারভুক্ত আসামি। এর মধ্যে আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তারা হলেন- ইফতি মোশাররফ সকাল, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, অনিক সরকার, মুজাহিদুর রহমান, মেহেদি হাসান রবিন, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মনিরুজ্জামান মনির ও এএসএম নাজমুস সাদাত।
মামলায় পলাতক চার আসামি হলেন- মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম, মোর্শেদ অমত্য ইসলাম ও মোস্তবা রাফিদ। এর মধ্যে মোস্তবা রাফিদের নাম এজাহারে ছিল না।
গত ১৮ নভেম্বর চার্জশিট গ্রহণ করে পলাতক চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। সবশেষ গত ৩ ডিসেম্বর পলাতক চার আসামির সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেয়া হয়। আগামী ৫ জানুয়ারি মধ্যে ক্রোকের আদেশ তামিলের বিষয়ে প্রতিবেদন দেয়ার দিন ধার্য রয়েছে। এরপরও পলাতক আসামিদের গ্রেফতার করা না গেলে তাদের হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হবে। পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের পরও তারা হাজির না হলে পলাতকদের অনুপস্থিত রেখেই মামলার বিচারকাজ শুরু হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯
কেআই/এজে