সিলেট: সিলেটে পিতা-পুত্রসহ ছয় জনের অনিয়ম-দুর্নীতিতে ছয় সহস্রাধিক গ্রাহক পথে বসেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মেট্টোসিটি সিকিউরিটিজ নামের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৬ হাজার ৩শ’ গ্রাহকের বোনাসসহ এক কোটি ৭ লাখ শেয়ার তছরুপ করা হয়েছে।
মেট্রোসিটির ব্যবস্থাপক ইব্রাহিম আলী ও তার ছেলে রাফি ইব্রাহিম, পরিচালক শামীম আহমদ, খালেদ আহমদ, সালেহ আহমদ গোপনে এসব শেয়ার বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শেয়ার হোল্ডাররা।
বৃহস্পতিবার (১১ জুন) বিকেলে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন মেট্টোসিটি সিকিউরিটিজের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগ স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান কমিটির সদস্য সচিব তানভীর আহমদ চৌধুরী।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, মেট্টোসিটির ৬ হাজার ৩শ’ জন নিবন্ধিত গ্রাহক আছেন। এ গ্রাহকরা বিভিন্ন সময়ে সোয়া কোটি টাকার মালামাল কিনেছেন। ২০১০ সালে শেয়ারের ঊর্ধ্বমুখী দাম অনুযায়ী এর বাজার মূল্য শতকোটি টাকার উপরে ছিল। শেয়ারবাজারে অব্যাহত দরপতনের ফলে বর্তমান এর বাজার মূল্য ৩০ থেকে ৩৫ কোটি টাকা। শেয়ার বাজারে দরপতন অব্যাহত থাকায় গ্রাহকরা সাধারণত ব্রোকার হাউজমুখী ছিলেন না। সে সুযোগে অভিযুক্তরা মালামাল তছরুপ করে তাদের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিক্রির পর টাকা আত্মসাত করে পালিয়েছেন।
বিএসই, সিএসইসি, সিডিবিএল’র মতো রেগুলেটর বিদ্যমান না থাকার পরও কিভাবে এ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হলো? -প্রশ্ন তুলে তানভীর আহমদ চৌধুরী বলেন, এ ব্যাপারে মামলা করা হলেও গ্রেফতারের পর দুর্নীতিবাজরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জামিনে বেরিয়ে আসেন। যে কারণে ৬ সহস্রাধিক গ্রাহক এখন টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছেন।
তিনি আরও বলেন, ১৮ মে চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসইসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মারুফ মতিনের সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের আলোচনা হয়। জুলাই মাসের মধ্যে এ সমস্যার সমাধান করতে না পারলে পদত্যাগ করবেন বলে ওই বৈঠকে ঘোষণা দেন তিনি।
কিন্তু এ যাবত লুন্ঠিত শেয়ার ফেরত পাওয়ার ব্যাপারে তারা কোনো আশার আলো দেখছেন না উল্লেখ করে চার দফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো- সিএসইসি ব্যবস্থাপনা পরিচালকের আশ্বাস অনুযায়ী জুলাই মাসের মধ্যে শেয়ার ফেরত; আত্মসাতকারী পরিচালকদের গ্রেফতার; বিএসই, সিএসইসি, সিডিবিএল’র যেসব কর্মকর্তা ২০১০ সাল থেকে নীরিক্ষণে (অডিট) ও ইনভেস্টিগেশনে নিয়োজিত ছিলেন তাদের সংশ্লিষ্টতা খুঁজে বের করা; ওই সময়ের মধ্যে বোনাসসহ শেয়ার ফেরত না পেলে শেয়ার বাজারের সব নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া। এসব দাবি পূরণ না হলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী স্বার্থ রক্ষা কমিটির সভাপতি শফিকুর রহমান, সদস্য আজিজুল হক, আলী আহমদ রেজওয়ান, আলী হায়দার বাবু, ইঞ্জনিয়ার শামীম, আব্দুস সালাম, আলী আমজদ, জাবেদ আমহদ, ফয়জুল ইসলাম, মাহমুদ আলী, আব্দুল হান্নান, ফারুক আহমদ, মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৫
এনইউ/আরএম