ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শেয়ারবাজার

পুঁজিবাজারে আবারও সক্রিয় কারাসাজি চক্র

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৭
পুঁজিবাজারে আবারও সক্রিয় কারাসাজি চক্র

ঢাকা: ইতিবাচক ধারায় হাঁটতে শুরু করতে না করতেই পুঁজিবাজারে আবারো সক্রিয় হয়েছে কয়েকটি কারাসাজি চক্র। চক্রগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, মোবাইলে ফোন এবং এসএমএস-এর মাধ্যমে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর মধ্যেমে বেশকিছু কোম্পানির শেয়ারের গুজব ছড়িয়ে বাজার থেকে শেয়ার প্রতি ৪ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত মুনাফা তুলে নিয়েছে।

এর মধ্যে ঈদ পরবর্তী বাজারে সিএনএ টেক্স, ফু-ওয়াং ও রহিমা ফুড, রূপালী ব্যাংক, মেঘনা পেট, সমতা লেদার কমপ্লেক্স, স্ট্যান্ডার্ড ও ফু-ওয়াং সিরামিক এবং কেয়া কসমেটিকস কোম্পানির নামে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে তারা বেশি দামে শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলে নিচ্ছে। আরো লাভের প্রত্যাশায় এসব শেয়ার কিনছেন এক শ্রেণির লোভী বিনিয়োগকারীরা।

যৌক্তিক কারণ ছাড়াই এসব শেয়ারের দাম বাড়ায় দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) পক্ষ থেকে অস্বাভাবিক হারে দাম বাড়ায় কারণ জানতে চেয়ে কোম্পানিগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পরিচালক শাকিল রিজভী বাংলানিউজকে বলেন, ইতিবাচক বাজারে দুই কারণে শেয়ারের দাম বাড়াছে। তার মধ্যে একটি হলো কারজাসি চক্রের কারণে। অন্যটি হলো নতুন কিছু বিনিয়োগকারী রয়েছেন তাদের কারণে।

তিনি বলেন, নতুন এই বিনিয়োগকারীরা শেয়ারের যৌক্তিক মূল্য বুঝতে পারছেন না। তারা লাভের আশায় ‘জেড’ ক্যাটাগরি কিংবা কম দামী শেয়ার দেখে কিনছেন। ফলে দুর্বল মৌলভিক্তি সম্পন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ছে। এটি বাজারে জন্য খারাপ সাইন।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, কারসাজি চক্র সব সময় ওৎ পেতে বসে থাকে। এখন বাজার ভালো সেই কারণে খারপ কোম্পানির পক্ষেও বিভিন্ন যুক্তি দেখিয়ে তারা বিনিয়োগকারীদের খাওয়াচ্ছে বিনিয়োগকারীও তা খাচ্ছে।

ডিএসইর তথ্য মতে, ঈদের আগের সমতা লেদারে শেয়ারের দাম ছিলো ২৭ টাকা কিন্তু ২৯ জুন থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত কোম্পানির শেয়ার বিক্রি হয়েছে ৩২ টাকা দামে। শেয়ারটির এই দামি বৃদ্ধিকে অস্বাভাবিক বলে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) কোম্পানিকে নোটিশ পাঠায়।

জবাবে কোম্পানিটি জানায়, কোনো রকম মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ারটির দাম বাড়ছে। কোম্পানিটি ‘জেড’ ক্যাটাগরির তালিকাভুক্ত রয়েছে।

একইভাবে ২০ জুন থেকে অস্বাভাবিক হারে দাম বাড়ায় ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানি মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ, ১৮ জুন থেকে দাম বাড়ায় লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, ২৯ জুন থেকে দাম বাড়ায় ‘এ’ ক্যাটাগরির রূপালী ব্যাংক, ২৯ জুন থেকে ৩৩ টাকা ১০ পয়সা দাম বাড়ায় ‘বি’ক্যাটাগরির ফাইন ফুড, ৩ জুলাই ৫৮ টাকা ৪০ পয়সা থেকে দাম বাড়ায় ‘এ’ ক্যাটাগরির  কোম্পানি স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ২৯ জুন থেকে দাম বাড়ায় ফু-ওয়াং ফুড, ২২ জুন থেকে দাম বাড়ায় ‘এ’ ক্যাটাগরির এইচ আর টেক্সটাইল লিমিটেড, ২৯ জুন থেকে দাম বাড়ায় ‘এ’ ক্যাটাগরির ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ২২ জুন থেকে বাড়ায়‘এ’ক্যাটাগরির সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইল,২০ জুন থেকে দাম বাড়ায় ‘জেড’ ক্যাটাগরির কে অ্যান্ড কিউ (বাংলাদেশ), ৪ জুলাই থেকে দাম বাড়ায় এ’ ক্যাটাগরির রংপুর ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড, ৪ জুলাই থেকে দাম বাড়ায় ‘জেড’ ক্যাটাগরির বঙ্গজ লিমিটেড এবং ২৯ জুন থেকে ১৫ টাকা ৯০ পয়সা থেকে বেড়ে সর্বশেষ ২১ টাকা পর্যন্ত হওয়ায় ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটি ফু-ওয়াং ফুড লিমিটেডকে চিঠি দেয় ডিএসই কর্তপক্ষ।

কোম্পানিগুলো ডিএসইকে জানিয়েছে যে, দাম বাড়ার বিষয়ে তাদের কাছে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই। কিন্তু তারপরও শেয়ারগুলোর দাম বাড়ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৭
এমএফআই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।