সিঙ্গাপুর: দুষ্টচক্রের ঘেরাটোপ থেকে মুক্তি আর অন্ধকার দূর করে আলোর প্রার্থনায় সিঙ্গাপুরে মহাধুমধামে উদযাপিত হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব দীপাবলি।
সিঙ্গাপুরে বসবাসরত হাজারও হিন্দু পরিবার বুধবার তেলের প্রদীপ (সর্ষের তেল আর সুতার সলতে) জ্বালিয়ে দিনটি উদযাপন করেন।
এই বিশেষ দিনকে স্বাগত জানাতে সিঙ্গাপুরের লিটল ইন্ডিয়াকে বিগত ১৫ দিন ধরে আলপনা, ফেস্টুন, দীপাবলির প্রতীক সম্বলিত বিশাল তোরণ ও আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছিল।
বুধবার সন্ধ্যা হওয়ার আগেই কয়েক লাখ ভারতীয় ও বিদেশি পর্যটকদের পদচারণায় আক্ষরিক অর্থেই ‘লিটল ইন্ডিয়া’ মিনি ইন্ডিয়ায় পরিণত হয়। শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীই নন, সব ধর্ম-পেশার মানুষ জাত-ধর্ম ভুলে এ মিলন মেলায় যোগ দেন।
যারা শুধুমাত্র ধর্মীয় রীতি পালনের উদ্দেশ্যে এখানে এসেছেন, তাদের অধিকাংশই সদ্য সংস্কার করা শ্রী ব্রাহ্মণ কালী মন্দির ও আশেপাশের এলাকায় প্রার্থনা করেন।
আঙ্গুলিয়া মসজিদ সংলগ্ন খোলা মাঠে বিশাল মেলা ছাড়াও পুরো এলাকা জুড়ে কাপড়চোপড়, গহনা, মুখরোচক খাবারের প্রচুর অস্থায়ী দোকান বসে। সারারাত আতশবাজি, গান-বাজনা, খানাপিনা ও আড্ডার মাধ্যমে এই অনন্য দীপাবলি উদযাপন করা হয়।
এদিকে, এই বিশাল জনস্রোত সামাল দিতে সিঙ্গাপুর সরকার আগে থেকেই ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। মেলা, অস্থায়ী দোকানপাট ও উৎসব উদযাপনের সুবিধার্থে বুধবার সকাল থেকেই ‘লিটল ইন্ডিয়া’য় যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে উৎসবে যাতায়াতের জন্য অতিরিক্ত চারটি মেট্রো ট্রেন ও ১৭টি সিটি বাস নিয়মিত রুটে সংযোজন করা হয়েছিল। উৎসবে আগত দেশি ও বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য সম্পূর্ণ এলাকায় দুই শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা, একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প ও দুটি মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়।
বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা পুরো এলাকায় নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে রাখেন। এছাড়াও বিদেশি পর্যটকদের সুবিধার্থে পুরো এলাকায় গাইড সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হয়।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই মহোৎসব উদযাপনের জন্য সিঙ্গাপুরে বুধবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৪