ঢাকা, রবিবার, ৮ ভাদ্র ১৪৩২, ২৪ আগস্ট ২০২৫, ০০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

খেলা

হার্ডলসে সোনার হাসি তানভীর-রোকসানার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০:৪৫, আগস্ট ২৩, ২০২৫
হার্ডলসে সোনার হাসি তানভীর-রোকসানার তানভীর ও রোকসানা।

হার্ডলসে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রেখেছেন নোয়াখালীর রোকসানা বেগম। আজ ১৭তম জাতীয় সামার অ্যাথলেটিক্সে ১০০ মিটার হার্ডলসে তিনি ১৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে প্রথম হয়েছেন।

চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হওয়া জাতীয় প্রতিযোগিতাতেও প্রথম হয়েছিলেন তিনি।

পুরুষদের ১১০ মিটার হার্ডলসে নাটকীয়ভাবে স্বর্ণ জিতেছেন তানভীর ফয়সাল। দৌড়ের শেষ ধাপে পায়ের স্পর্শে পড়ে যায় একটি হার্ডল। উপস্থিত অনেকেই ধরে নেন, হয়তো এ কারণে তিনি ডিসকোয়ালিফাই হয়ে গেছেন। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, হার্ডল ইচ্ছাকৃতভাবে না ফেললে শাস্তি নেই। জাজদের বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেটি দুর্ঘটনাবশতই ঘটেছে। সময় ১৪.৭০ সেকেন্ড এই টাইমিংই তাকে এনে দেয় সোনার পদক। এটি তানভীরের ক্যারিয়ারের তৃতীয় জাতীয় স্বর্ণ। তবে জয়ের পরও তৃপ্ত নন তানভীর। বললেন, ‘১১০ মিটার হার্ডলসে আমার তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। কিন্তু প্রচারের আলোটা আমরা পাই না। স্প্রিন্টাররা সামনে আসে, হার্ডলসে চোখ পড়ে না কারও। এটা আমার কষ্ট দেয়। ’

তানভীরের অ্যাথলেটিক্স শুরু সেনাবাহিনীর আন্তঃইউনিট প্রতিযোগিতা দিয়ে। তারপর আন্তঃবিভাগীয় আসর, আর সেখান থেকে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের মঞ্চে ওঠা। প্রতিটি ধাপেই জয়, আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে। অন্যদিকে, নারীদের ১০০ মিটার হার্ডলসে রাজত্ব করলেন নোয়াখালীর মেয়ে রোকসানা বেগম। জীবনের নানা বাঁধা পেরিয়ে পৌঁছেছেন আজকের জায়গায়। সময় নিয়েছেন ঠিক ১৫ সেকেন্ড, দ্বিতীয়বারের মতো জিতলেন জাতীয় স্বর্ণপদক।

রোকসানার গল্পটা হার্ডলস ট্র্যাকে নয়, জীবন নামের দীর্ঘ ম্যারাথনে। বাবার মাইক্রোবাস চালানোর আয়ে চলত সংসার, এখন তিনি কাজ করতে পারেন না। তিন বোন ও এক ভাইয়ের পরিবারের হাল ধরেছেন এখন রোকসানা, সেনাবাহিনীর চাকরি করে যা পান, তা দিয়েই সংসারে সহায়তা।

ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছিল লংজাম্প দিয়ে। কিন্তু কোচ রফিকউল্লাহ মিলনের পরামর্শে হার্ডলসে পা রাখেন। কোচ বলেছিলেন, ‘‘লংজাম্প নয়, হার্ডলস কর। এখানে জায়গা ফাঁকা। ’’

সেই শুরুর পর চলছিল কঠিন লড়াই। সন্ধ্যায় প্র্যাকটিস শেষে বাড়ি ফিরতে দেরি হলে গ্রামের লোকজনের কটু কথা শুনতে হতো। মা-বাবার ওপরও চাপ পড়ত।
রোকসানা বলেন, ‘‘অনেক কথা শুনেছি। মা-বাবাকেও অপমান সহ্য করতে হয়েছে। খেলাধুলা করলে মেয়েদের নিয়ে এমনই হয় আমাদের এলাকায়। ’’ তবে হার মানেননি তিনি। এখন রোকসানার চোখ এসএ গেমসের পদকে। আরেকটি প্রশ্নের জবাবে রোকসানা বলেন, ‘‘না খেললে বিয়ে হয়ে যেত। গ্রামের নিয়মই এমন’’

এআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।