ঢাকা: লা লিগার হাইভোল্টেজ ম্যাচে দুই স্প্যানিস জায়ান্ট বার্সেলোনা আর অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ মাঠে নেমেছিল। বার্সার ঘরের মাঠ ক্যাম্প ন্যুতে অ্যাতলেতিকোকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে বার্সার ‘তিন দানব’ খ্যাত মেসি, নেইমার আর সুয়ারেজ।
কাতালান শিবিরে বেশ ক’দিন ধরে কোচ-শিষ্য বিতর্কের মাঝেও স্বাগতিক হিসেবে জয়ের জন্য মাঠে নেমেছিল বার্সেলোনা। দলের কোচ লুইস এনরিক শুরুর একাদশে মাঠে পাঠান লিওনেল মেসি, নেইমার, লুইস সুয়ারেজ, পিকে, মাসচেরানো, দানি আলভেজ, ব্রাভো, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, জরদি আলবা, বাসকুয়েটস ও রেকিটিককে।
অন্যদিকে, অ্যাতলেতিকোর কোচ দিয়েগো সিমিওনে শুরুর একাদশে মাঠে পাঠান জুয়ানফ্রান, দিয়েগো গডিন, জিমিনেজ, গ্যাবি, থিয়াগো, কোকে, গ্রিজম্যান, আরদা তুরান আর মারিও মান্দজুকিচের মতো তারকাদের।
ম্যাচের ১২ মিনিটের মাথায় প্রায় ৮৯ হাজার উপস্থিত দর্শকের সামনে গোল করেন বার্সার ব্রাজিল তারকা নেইমার। মেসির জাদুকরী এক পাস থেকে বল পাওয়ার কথা ছিল উরুগুয়ের তারকা সুয়ারেজের। কিন্তু বলের লাইনে গিয়ে নিয়ন্ত্রন ঠিকমতো নিতে না পারায় বল গিয়ে পড়ে নেইমারের পায়ে। আর বাঁপায়ের টোকায় অ্যাতলেতিকোর জালে বল জড়িয়ে দলকে লিড পাইয়ে দেন নেইমার।
গোল করার কয়েক মিনিট পরেই নেইমারকে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয়। অ্যাতলেতিকোর জিমিনেজের বুটের আঘাতে ডানপায়ের গোড়ালি দিয়ে রক্ত ঝরলে কিছুটা সময় মাঠের বাইরে থাকতে হয় তাকে।
ম্যাচের ২২ মিনিটের মাথায় প্রায় মধ্য মাঠ থেকে বল টেনে নেইমারকে বাড়িয়ে দেন সুয়ারেজ। সহজ সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন নেইমার। ব্রাজিল অধিনায়কের হেডটি গোলবারের পাশ দিয়ে বাইরে চলে যায়। তবে, ছোট ছোট পাসে সিমিওনের ছাত্ররা বার্সার ডি বক্সে হানা দিলেও কাতালানদের ডিফেন্ডারদের দৃঢ়তায় সুবিধা আদায় করতে পারছিলো না।
ম্যাচের ২৯তম মিনিটে মেসি-নেইমারের আরেকটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। মেসির একটি জোড়ালো শট অ্যাতলেতিকোর গোলরক্ষক মোউয়ার গায়ে লেগে ফিরে এলে মেসি বল বাড়ান নেইমারকে লক্ষ্য করে। কিন্তু তার আগেই ডিফেন্সের শক্ত বাধায় বল নিয়ন্ত্রনে নিতে ব্যর্থ হন নেইমার।
৩৫তম মিনিটে উপস্থিত দর্শক আবারো মেসির পায়ের জাদু দেখে। প্রতিপক্ষের ডি বক্সে বল নিয়ে অসাধারণ এক পাসে মেসি বল বাড়িয়ে দেন সুয়ারেজকে। আর তা থেকে গোল করতে ভুল করেন নি উরুগুয়ের তারকা। ফলে, ২-০ গোলে এগিয়ে যায় বার্সা।
প্রথমার্ধে আর কোনো গোল না হলে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে নিজেদের পায়ে ৬৯ শতাংশ বল নিয়ন্ত্রনে রাখা বার্সা বিরতিতে যায়।
বিরতির পরে ম্যাচের ৫৭তম মিনিটে নিজেদের ডি বক্সে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে জিসাস গ্যামেজকে বাধা দেন মেসি। ফলে, পেনাল্টি পায় অ্যাতলেতিকো। যা থেকে গোল করেন মারিও মান্দজুকিচ। ম্যাচের ফলাফল দাঁড়ায় ২-১।
ম্যাচের ৭৬ মিনিটের মাথায় সমতায় ফেরার সুযোগ পেয়েছিল অতিথিরা। মান্দজুকিচের বাড়ানো বলে বার্সার গোলরক্ষক ক্লদিয়ো ব্রাভোকে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন বদলি হিসেবে মাঠে নামা ফার্নান্দো তোরেস। তিন মিনিট পরেই ব্রাভোর দৃঢ়তায় আরো একটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় অ্যাতলেতিকোর।
ম্যাচের ৮৭ মিনিটের মাথায় আর্জেন্টাইন অধিনায়ক মেসি দলের তৃতীয় গোলটি করেন। গোলবারের ডানদিক থেকে লিভারপুলের সাবেক স্ট্রাইকার সুয়ারেজ বল বাড়িয়ে দেন মেসিকে। রেকিটিকের সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান পাস খেলে অ্যাতলেতিকোর জালে বল জড়িয়ে দেন মেসি। ৩-১ এ এগিয়ে যায় কাতালানরা।
ম্যাচের বাকি সময়ে আর কোনো গোল না হলে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সেলোনা।
আর এ জয়ের ফলে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়েই রইল বার্সা। ১৮ ম্যাচ খেলে ১৩ জয়, দুই ড্র আর তিন পরাজয় নিয়ে লুইস এনরিকের শিষ্যদের সংগ্রহ ৪১ পয়েন্ট। এক ম্যাচ কম খেলে এক পয়েন্ট বেশি নিয়ে টেবিলের শীর্ষে রয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। আর বার্সার থেকে তিন পয়েন্ট কম নিয়ে টেবিলের তিনে রইল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ।
বাংলাদেশ সময়: ০৪২৫ ঘণ্টা, ১২ জানুয়ারি ২০১৫