ঢাকা: পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চির দিনের মতো চলে গেলেন বাংলাদেশ জাতীয় হকি দলের সাবেক অধিনায়ক জুম্মন লুসাই।
আজ বিকাল সাড়ে তিনটা রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্ট থাকা অবস্থায় মারা যান এই হকি তারকা।
এর আগে আশির দশকে আন্তর্জাতিক হকি অঙ্গনে মাঠ কাঁপানো সাবেক হকি তারকা জুম্মন লুসাই গুরতর অসুস্থ অবস্থায় বাংলাদেশ মেডিকেলের লাইফ সাপোর্টে (আইসিইউতে) রাখা হয়েছেছিল।
শুক্রবার (১৬ জানুয়ারী) বিকেল পৌনে ৪টায় ঢাকা আবাহনী ক্লাবে নিজ কক্ষে স্ট্রোক করলে তাকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জুম্মন লুসাইকে শুধু তারকা খেলোয়াড় বললেই ভুল হবে। বাংলাদেশের হকি খেলার ইতিহাসে যদি পাঁচজন সেরা হকি খেলোয়াড় বাছাই করা হয়, তাহলে জুম্মনের নাম উচ্চারিত হবে।
জুম্মন লুসাই তার অসাধারণ নৈপুণ্যের কারণে ১৯৮৫ সালে বিশ্ব হকি একাদশে সুযোগ পেয়েছিলেন। এ অনন্য কীর্তি তাকে বসিয়েছে সম্মানের উচ্চ শিখরে। জুম্মন লুসাই ছিলেন অনেক খেলোয়াড়ের স্বপ্নের নায়ক। তিনি খেলতেন ডিফেন্সে।
দীর্ঘদিন জাতীয় হকি দলে খেলেছেন তিনি। ছিলেন ফুলব্যাক খেলোয়াড়ে। বাংলাদেশের হকিতে পেনাল্টি কর্নারের জন্য পারদর্শী (স্পেশালিষ্ট) বলা হতো তাকে। জুম্মন লুসাই বাংলাদেশের প্রথম হ্যাট্রিকম্যান। ঢাকায় ৮৫ সালে দ্বিতীয় এশিয়া কাপ হকিতে ইরানের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেন তিনি।
১৯৮৯ সালে শেষবার জাতীয় দলে খেলেছে এশিয়া কাপ হকিতে। ৯৬ সাল পর্যন্ত ক্লাব হকি খেলেছেন নিবেদিত প্রাণ জুম্মন লুসাই। তার বড় ভাই ধনধন লুসাই পুলিশে হকি খেলেছেন। পরে তিনি পুলিশের কর্মকর্তা হয়েছিলেন।
জুম্মন লুসাইয়ের পরিবার এক ঐতিহ্যবাহী হকি পরিবার। তাদের পরিবারে বেশ ক’জন হকি খেলতেন। ছোট ভাই জুবেল লুসাই হকি খেলেছেন আবাহনীর জার্সি গায়ে। জুম্মন লুসাইয়ের বেয়াই রামা লুসাই সতের নম্বর জার্সি গায়ে সমান তালে হকি এবং ফুটবল খেলেছেন মোহামেডানে। সিলেটে আদিবাসি লুসাই পরিবারে জন্ম নেওয়া জুম্মন লুসাই জীবন ধারণ করেছেন খুবই সাদাসিধে।
তার খেলার জীবনে ‘৮৫ সালে করাচিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে বিশ্ব একাদশের হয়ে খেলেছিলেন। হকি ফেডারেশনের ৪০ বছর পূর্তিতে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। এছাড়া দেশের মূল জনস্রোতের বাইরের একজন প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশের জন্য অনেক সম্মান বয়ে এনেছেন জুম্মন লুসাই।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৫