ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খেলা

শেখ জামালের পথ আগলে ব্রাদার্স

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৫
শেখ জামালের পথ আগলে ব্রাদার্স ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ফাইল ফটো)

ঢাকা: শক্তির বিচারে প্রতিপক্ষ ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেডের চেয়ে পরতে পরতে এগিয়ে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। কোটি টাকা খরচে বিদেশী নির্ভর যে শক্তিশালী দল গড়েছে জামাল তার সামনে কাগজ-কলমের হিসেবে অনেক পিছিয়ে ব্রাদার্স।



তবে যে কোনো বড় দলকে চমকে দেয়ার জন্য ঠিক যেন প্রস্তুত আছে গোপীবাগের দলটি। কারণ তাদের অতীত ইতিহাস যে সাক্ষ্য দিচ্ছে এ বিষয়টি। ফুটবল ক্লাব হিসেবে ব্রাদার্স এর অগ্রযাত্রা ১৯৭৩ সালে তৃতীয় বিভাগ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জনের মাধ্যমে। কমলা জার্সির এই দলটি পরের বছরই জিতে নেয় দ্বিতীয় বিভাগের শিরোপা। প্রথম বিভাগে উঠার পথে শেষ ম্যাচটিতে তারা জিতেছিল ৮ গোলের বিশাল ব্যবধানে। ১৯৭৫ সালে প্রথম বিভাগ ফুটবলে ব্রাদার্স তাদের প্রথম ম্যাচেই তৎকালীন চ্যাম্পিয়ন জায়ান্ট আবাহনী ক্রীড়া চক্রকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি করে।

তবে দল দুটির বর্তমান অবস্থান, শক্তিমত্তা, খেলার ধরণ, ক্লাবের ইতিহাসে কোনো মিলই নেই। একটি জায়গায় এসে দুই ফুটবল ক্লাব মিলিত হয়েছে একই বিন্দুতে। সেটি হচ্ছে ফেডারেশন কাপে উভয় দলই শিরোপা জিতেছে দু’বার করে! ব্রাদার্স জিতেছে সেই ১৯৯১ ও ২০০৫ সালে। সে তুলনায় শেখ জামালের শিরোপাজয়ের স্মৃতি বেশ টাটকা। তাদের অর্জন ২০১১ এবং ২০১৩ সালে। এই আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জামালই।

‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শেষ আটে নাম লিখিয়েছে কোচ মারুফুল হকের শিষ্যরা। দুই খেলায় তাদের সংগ্রহ ৬ পয়েন্ট, করেছে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বেশি ১১ গোল। বিপরীতে হজম করেছে মাত্র ১ গোল। টুর্নামেন্টের একমাত্র হ্যাটট্রিকটিও তাদের। করেছেন হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড ওয়েডসন এ্যানসেলমে করেন সে হ্যাটট্রিকটি। গ্রুপে তারা হারায় ফেনী সকার ক্লাবকে (৪-১) এবং টিম বিজেএমসিকে (৭-০ গোলে)। যা কিনা এ আসরের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ব্যবধানে জয়ের রেকর্ড।

ওদিকে ভারতীয় কোচ সৈয়দ নঈমউদ্দিনের ব্রাদার্স হচ্ছে ‘ডি’ গ্রুপের রানার্সআপ। দুই ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ২ পয়েন্ট। গোল করেছে ২টি, খেয়েছেও সমান গোল। তারাই এ টুর্নামেন্টের একমাত্র দল, যারা কোন ম্যাচ না জিতেই উঠেছে শেষ আটে! প্রথম ম্যাচে তারা ১-১ গোলে ড্র করে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির বিপক্ষে। এরপরের ম্যাচেও একই ব্যবধানে ড্র করে ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডের বিপক্ষে।

মজার বিষয় হচ্ছে এ আসরের মতো গতবারও ব্রাদার্স গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে কোয়ার্টারে উন্নীত হয়েছিল। সেবার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কাছে ২-০ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছিল গোপীবাগের দলটি।

পক্ষান্তরে এবারের মতো শেখ জামাল সেবারও ছিল ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন। কোয়ার্টারে তারা হারিয়েছিল মোহামেডানকে (৩-১ গোলে)। সেবার অবশ্য কোন ম্যাচে মুখোমুখি হয়নি জামাল-ব্রাদার্স।   

শেখ জামালের ম্যানেজার আনোয়ারুল করিম হেলাল টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বলেছিলেন, ‘শেখ জামাল সবসময় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো দল গড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আমরা গত মৌসুমের বেশিরভাগ খেলোয়াড়কে নিয়েই দল গড়েছি। নতুনদের মধ্যে পাঁচজনকে এনেছি। এবারও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই খেলব। ’
 
পক্ষান্তরে ব্রাদার্সের ম্যানেজার লিটন খান বলেছিলেন, ‘শুধু একটা কথাই বলব। এই টুর্নামন্টে ব্রাদার্স ইউনিয়ন খেলবে ব্রাদার্সের মতোই। ’

এখন দেখার বিষয় এ ম্যাচে ২০১০ সালে গঠিত শক্তিশালী শেখ জামাল ধানমন্ডিকে হারিয়ে অঘটন ঘটিয়ে এ টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম জয় তুলে নিতে পারে কিনা? নাকি ঘরোয়া ফুটবলে ৫ বারের শিরোপাধারী ব্রাদার্সকে পরাভূত করে ঘরোয়া ফুটবলে ৭ ট্রফি জয়ের পথে এক পা বাড়িয়ে রাখবে শেখ জামাল।

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার বিকেল সোয়া ৫টায় অনুষ্ঠিত হবে শেখ জামাল-ব্রাদার্স ইউনিয়ন ম্যাচটি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪১ ঘণ্টা, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।