ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

খেলা

এসএ গেমস নিয়ে আর্থিক সংকটে বিওএ

সিনিয়র স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০১৫
এসএ গেমস নিয়ে আর্থিক সংকটে বিওএ

ঢাকা: দুই মাস পরই ভারতের গৌহাটি ও শিলং মুখরিত হবে দক্ষিণ এশিয়ার অ্যাথলেটদের পদচারণায়। স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জের ঝনঝনানিতে প্রকম্পিত হবে প্রতিটি ভেন্যু।

দক্ষিণ এশিয়ার অলিম্পিক খ্যাত সাউথ এশিয়ান গেমস বা এসএ গেমস শুরু হবে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে।

এসএ গেমসের ১২তম আসরে অংশ নিতে নিজেদের প্রস্তুতির পর্ব সেরে নিচ্ছেন বাংলাদেশের অ্যাথলেটরা। আর প্রতিযোগীরা ঠিকমতো অনুশীলনে অংশ নিচ্ছেন কি না তা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) কর্তা ব্যক্তিরাও।

এসএ গেমসের প্রস্তুতি নিয়ে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের উপ মহাসচিব আশিকুর রহমান মিকু বলেন, এসএ গেমসকে সামনে রেখে প্রতিযোগীরা বেশ জোরেসোরেই তাদের প্রস্ততি চালিয়ে যাচ্ছেন। আমি তাদের প্রস্তুতির সব খবরই রাখছি। যেহেতু এখনও দুই মাস সময় হাতে আছে সেহেতু আসর শুরু হওয়া পর্যন্ত তারা নিজেদের বেশ দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন।

অ্যাথলেটরা প্রস্তুতি ভালো চালিয়ে গেলেও মূল প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার আগে তাদের প্রশিক্ষণ ব্যয় নিয়ে বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন। অ্যাথলেটদের প্রস্তুতি ব্যয় বাবদ যে বাজেট জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে দেওয়া হয়েছে সেই অনুযায়ী বাজেট না পাওয়ায় বিওএ বেশ উৎকণ্ঠার দিন কাটোচ্ছে বলে জানালেন মিকু।

তিনি বলেন, অ্যাথলেটদের ট্রেনিং বাবদ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাছে আমরা ১৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকার বাজেট জমা দিয়েছি। কিন্তু পেয়েছি ১০ কোটি টাকা। এখনও ৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা প্রয়োজন। প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময়ে অ্যাথলেটদের যাতায়াত, প্রশিক্ষণ পোশাক, খাবার ও ট্রেনিং সরঞ্জাম ক্রয়সহ আরও নানাবিধ কাজে টাকা প্রয়োজন হয়। বাজেট অনুযায়ী টাকা না পাওয়ায় আপাতত বিভিন্ন স্পন্সর থেকে টাকা নিয়ে আপাতত কাজ চালাচ্ছি।

এতো গেলো প্রশিক্ষণ ব্যয় বাবদ খরচ। এর পর ম‍ূল পর্বে অংশ নিতে প্রায় ৫শ’ অ্যাথলেটকে নিয়ে ভারতে যাওয়া, থাকা, হোটেল থেকে ভেন্যুতে যাওয়া, সেখানকার আনুষঙ্গিক অন্যান্য ব্যয় এবং দেশ ফিরে আসা বাবদ আরও ১০ কোটি টাকা প্রয়োজন। আর এই মর্মেও এনএসসিকে ইতোমধ্যেই বাজেট দেওয়া হয়েছে বলে জানালেন এই ক্রীড়া সংগঠক।

আর্থিক সংকটের ছাড়াও সমস্যা আছে আরও অনেক। এবারের এসএ গেমস প্রতিবেশি দেশ ভারতে আয়োজিত হলেও সেখানে যাওয়া, যাওয়ার পর ভেন্যু গুলোতে নিয়মিত যাতায়াত নিয়ে ভাবতে হচ্ছে বাংলাদেশ অলিম্পক অ্যসোসিয়েশনের ট্রেনিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের চেয়ারম্যানকে।

তিনি বলেন, গৌহাটি ও শিলংয়ের পথগুলো পাহাড়ি তাই যাতায়াতে সমস্যা হতে পারে। আর ওই সময় গৌহাটি ও শিলংয়ে শীত থাকবে। তাছাড়া ঢাকা থেকে গৌহাটি ও শিলংয়ে সরাসরি ফ্লাইট নেই। প্লেনযোগে আমাদের আগে যেতে হবে কলকাতা। সেখান থেকে গৌহাটি। ঢাকা থেকে সরাসরি যাতায়াতের বিকল্প হিসেবে আমরা চার্টার বিমানের কথা ভাবলেও তা সম্ভব হবে না কারণ চার্টার বিমান অনেক ব্যয়বহুল।       

এতসব সংকটের মাঝেও নিজের অ্যাথলেটদের নিয়ে এবারের আসরে সাফল্যের স্বপ্ন দেখছেন এই প্রশিক্ষণ চেয়ারম্যান। এবারের আসরে শুটিং, আর্চারি, ভারোত্তলন, তায়েকন্দো, উষু, কাবাডি ও খোকোতে বাংলাদেশের অ্যাথলেটরা ভালো করবে বলে আশাবাদী তিনি।

বাজেটের পুরো টাকা বিওএ এখনও কেন পায়নি ? এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস বলেন, এসএ গেমস বাবদ সরকার থেকে যে পরিমাণ টাকা আমাদের মারফত বিওএ’র জন্য বরাদ্দ দিয়েছে তারা সেটাই পেয়েছে। এরপর যদি সরকার তাদের আরও টাকা বরাদ্দ দেয় তাহলে তারা সেটা পাবে।     

এসএ গেমসের এবারের আসরে বাংলাদেশের প্রায় ৫শ’ অ্যাথলেটের ২২টি ইভেন্টে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। তবে আসলেই কতটি ইভেন্টে তারা অংশ নেবে এই বিষয়ে আয়োজক দেশ ইন্ডিয়ান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন চূড়ান্ত নির্দেশনা দেয়নি। খুব শিগগিরই তারা নির্দেশনা দেবে বলে জানিয়েছেন আশিকুর রহমান মিকু।

এসএ গেমসের গেল আসরে আর্চারি, অ্যাথলেটিকস, ব্যাডমিন্টন, বাস্কেটবল, বক্সিং, ক্রিকেট, সাইক্লিং, ফুটবল, গলফ, হকি, হ্যান্ডবল, জুডো, কাবাডি, কারাতে, শুটিং, স্কো্য়াশ, সুইমিং, টেবিল টেনিস, তায়েকন্দো, ভলিবল, ভারোত্তলন, কুস্তি ও উষু এই ২৩টি ইভেন্টে অংশ নিয়েছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের অ্যাথলেটরা।

১৯৮৪ সাল থেকে এসএ গেমসের প্রতিটি আসরে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ৬৩টি স্বর্ণ, ১৬২টি রৌপ্য ও ৩৪৭টি ব্রোঞ্জসহ মোট ৫৭২টি পদক জিতে দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের মধ্যে পদক তালিকায় পঞ্চমস্থানে রয়েছে।

সমান সংখ্যক আসরে ৯০০টি স্বর্ণ, ৫৪২টি রৌপ্য ও ২৮৬টি ব্রোঞ্জসহ মোট ১৭২৮টি পদক জিতে পদক তালিকার শীর্ষে রয়েছে ভারত। এসএ গেমসের সবশেষ আসরে ২০১০ সালে বাংলাদেশে আয়োজিত একাদশ আসরে ১৮টি স্বর্ণ, ২৩টি রৌপ্য, ৫৬টি ব্রোঞ্জসহ মোট ৯৭টি পদক জিতে পদক তালিকায় তৃতীয় স্থানে ছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫৬ ঘটা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৫
এইচএল/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।